যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন লেবার সরকারের অবৈধ অভিবাসন এবং মানব পাচারকারী চক্র মোকাবেলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, অভিবাসন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অবৈধভাবে কাজ করার অভিযোগে জানুয়ারিতে ৬০০ জনেরও বেশি অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। যা এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ৭৩ শতাংশ বেশি। লন্ডন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) প্রকশিত সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বছর জানুয়ারিতে ৬০৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যে সংখ্যা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ৩৫২ জন ছিল। নেইল বার, রেস্তোরাঁ, কার ওয়াস এবং দোকানসহ ৮০০টিরও বেশি স্থানে অভিযান চালিয়ে অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে গত বছর কিয়ার স্টারমারের দায়িত্ব গ্রহণের পর তাৎক্ষণিকভাবে তার রক্ষণশীল পূর্বসূরী ঋষি সুনাকের যুক্তরাজ্যে অনথিভুক্ত অভিবাসন রোধ করার পরিকল্পনা বাতিল করে নতুন আগতদের রুয়ান্ডায় নির্বাসিত করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার বলেন, নিয়োগকর্তারা অনেক দিন ধরেই অবৈধ অভিবাসীদের শোষণ করছেন। অনেক লোক অবৈধভাবে এসে কাজ করছেন। তাদের বিরুদ্বে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, আমাদের সীমান্ত নিরাপত্তাকে দুর্বল করে দেওয়া এবং দীর্ঘদিন ধরে পার পেয়ে যাওয়া অপরাধী চক্রগুলোকে ধ্বংস করার জন্য আমরা নতুন কঠোর আইনের পাশাপাশি রেকর্ড মাত্রায় আইনের প্রয়োগ বৃদ্ধি করছি।
প্রতি বছর হাজার হাজার অবৈধ অভিবাসী ছোট অনিরাপদ নৌকায় বিপজ্জনকভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে উত্তর ফ্রান্স থেকে দক্ষিণ ইংল্যান্ডে প্রবেশ করেন। গত জুলাইয়ের সাধারণ নির্বাচনে এটি প্রধান ইস্যু ছিল যা স্টারমারের লেবার পার্টিকে ক্ষমতায় এনেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে চ্যানেলে প্রায় ৩৬,৮১৬ জনকে শনাক্ত করা হয়, যা ২০২৩ সালে আসা ২৯,৪৩৭ জনের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি।
অনথিভুক্ত অভিবাসন কমানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, স্টারমার একটি নতুন সীমান্ত নিরাপত্তা কমান্ডও প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং ইউরোপোলসহ ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করেছেন। চোরাচালানকারী চক্র মোকাবেলার লক্ষ্যে জার্মানি ও ইরাকের সাথে যৌথ কর্মপরিকল্পনা স্বাক্ষর করেছে ব্রিটেন। দেশগুলো পূর্ববর্তী রক্ষণশীল সরকারের অধীনে স্বাক্ষরিত পূর্ববর্তী চুক্তিগুলোর উপর ভিত্তি করে তৈরি, যার মধ্যে ফ্রান্স এবং আলবেনিয়াও অন্তর্ভুক্ত। সরকার অনিয়মিত অভিবাসীদের তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার হার বৃদ্ধির দিকেও ইঙ্গিত করছে, যা ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ।
সূত্র: এএফপি
এসজেড