ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে হামাস ইসরায়েলের ছয় বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, তবে বিনিময়ে ৬২০ ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি স্থগিত করেছে ইসরায়েল। দেশটির দাবি, হামাস পরবর্তী বন্দি মুক্তির নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি বিলম্বিত থাকবে। খবর আল জাজিরা।
গাজায় হামাস ২০ ফেব্রুয়ারি ছয় ইসরায়েলি বন্দির মুক্তি দেয়, কিন্তু ইসরায়েল শনিবার তাদের বন্দি মুক্তির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের অসম্মানজনক অনুষ্ঠান ছাড়াই বন্দি মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে।
এদিকে হামাস বলেছে, ফিলিস্তিনিদের সপ্তম ব্যাচকে মুক্তি দিতে ইসরায়েলের এই বিলম্ব “যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন”। এছাড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে মুক্তির জন্য হামাস ৬ জীবিত ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্ত করার পর ইসরায়েলি বিক্ষোভকারীরা তেল আবিবে অবশিষ্ট সকল বন্দিদের ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে সমাবেশ করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলম্বিত করার ঘোষণা দিয়েছে। এটিকে যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়ায় আরেকটি বড় ধরনের সম্ভাব্য সংকট বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও শনিবারই ছয় ইসরায়েলি বন্দির মুক্তি দিয়েছে হামাস।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস পরবর্তী বন্দি মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি বিলম্বিত হবে। তিনি বলেছেন, প্রতি সপ্তাহে বন্দিদের মুক্তির সময় যে “অসম্মানজনক অনুষ্ঠান” করে হামাস, সেটি ছাড়াই বন্দি মুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেসব বন্দির মুক্তি পাওয়ার কথা তাদের মধ্যে ৫০ জন যাবজ্জীবন এবং ৬০ জন দীর্ঘমেয়াদে কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন। এছাড়া আরও ৪৪৫ জনকে ৭ অক্টোবর ইসরায়েল আটক করেছিল।
অন্যদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলার সময় হামাস যাদের আটক করেছিল তাদের মধ্যে ৬২ জন এখনও বন্দি অবস্থায় আছে। এর মধ্যে অর্ধেক জীবিত আছে বলে ধারণা করা হয়। তিন পর্বের যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও বন্দির মুক্তি পাওয়ার কথা, যা আগামী ১ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, গাজায় ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের ফলে প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
thebgbd.com/NIT