ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বিএনপি নেতার ভাই, ‘আমাদের অনুমতি ছাড়া গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করবো সবাই মিলে’

বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তির নাম শেখ রাসেল। তিনি কুমারখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং পান্টি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ০১ মার্চ, ২০২৫
বিএনপি নেতার ভাই, ‘আমাদের অনুমতি ছাড়া গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করবো সবাই মিলে’ সংগৃহীত

‘কে কী করেছে? কে আওয়ামী লীগ করেছে? সেটা না। সবাই আমাদের মানুষ। সবাই চৌরঙ্গীর মানুষ। এদেরকে অ্যারেস্ট করতে হলে আমাদের কাছ অনুমতি নিয়ে করতে হবে। এর বাইরে যদি একটা মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা থানা ঘেরাও করব সবাই মিলে। কিডা কোন দল করেছে এটা দেখার বিষয় না।’ 


কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় এক সরকারি কর্মকর্তা ও বিএনপি নেতার ভাইয়ের এমন বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে। শুক্রবার রাতে ফেসবুকে এক মিনিট ২২ সেকেন্ডের ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।


বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তির নাম শেখ রাসেল। তিনি কুমারখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং পান্টি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি তিনি চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ রেজাউল করিম মিলনের ভাই এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত। বর্তমানে তার কর্মস্থল ময়মনসিংহ।


স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, যা আবেগপ্রবণ ও জ্বালাময়ী ছিল। উপস্থিত অনেকে সেই বক্তব্য ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করেন এবং পরে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।


অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শেখ রেজাউল করিম মিলন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী। এছাড়া পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মিজানুর রহমান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী মোল্লা, বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম আসাদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।


ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে শেখ রাসেলকে হাতজোড় করে বলতে শোনা যায়, অতীতে অনেক ভুল করেছেন, ছোট ছিলেন এবং সেসব বুঝতে পারেননি। তিনি সবাইকে ক্ষমা করে একসঙ্গে থাকার আহ্বান জানান এবং চৌরঙ্গীকে উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দেন।


এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে শেখ রাসেল বলেন, তার বক্তব্যের মূল উদ্দেশ্য ছিল কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়। তবে যদি তার কথার কোনো ভুল ব্যাখ্যা হয়, সেটাকে ‘স্লিপ অব টাং’ বলে উল্লেখ করেন।


অন্যদিকে, কুমারখালী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. লুৎফর রহমান এই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলেন, দল এমন মন্তব্য সমর্থন করে না। কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখও বলেন, পুলিশ স্বাধীনভাবে কাজ করবে এবং কারও নির্দেশ অনুযায়ী চলবে না।


thebgbd.com/NIT