প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে শুক্রবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বাদানুবাদ এবং বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার ঘটনায় উল্লসিত মস্কো। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহযোগীরা হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ওই ঘটনার জন্য দায়ি করেছেন জেলেনস্কিকে।
পুতিনের নেতৃত্বাধীন রুশ নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ শনিবার জেলেনস্কিকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘অহঙ্কারী বরাহনন্দন ওভাল অফিসে সপাটে থাপ্পড় খেয়েছে।’ রাশিয়ার প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ তহবিলের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ শনিবার ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির মধ্যে সংবাদমাধ্যমের সামনে বাদানুবাদকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে চিহ্নিত করেছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে বাদানুবাদের পর বৈঠক ছেড়ে চলে যান জেলেনস্কি। যৌথ সাংবাদিক বৈঠকও বাতিল হয়ে যায়। ক্রুদ্ধ জেলেনস্কি হোয়াইট হাউস ছেড়ে বেরিয়ে যান। এরপরেই সংবাদমাধ্যমের সামনে ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিন শান্তি চাইলেও জেলেনস্কি চান না।’ যুদ্ধের আবহে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য রাশিয়ার ‘বড় প্রাপ্তি’ বলেই মনে করছেন অনেকে।
ট্রাম্প ওভাল অফিসের বৈঠকে জেলেনস্কির উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের কোটি কোটি ডলার, অস্ত্র দিয়েছি। আমাদের অস্ত্র না পেলে দু’সপ্তাহের মধ্যে এই যুদ্ধ শেষ হয়ে যেত।’ জবাবে জ়েলেনস্কি বলেন, ‘হ্যাঁ, দু’সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধ শেষ হওয়ার কথাটা পুতিনের কাছেও শুনেছি।’ সামরিক সাহায্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেও ট্রাম্পের দাবি খারিজ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশেই রয়েছি। যুদ্ধের পুরো সময় আমরা নিজেদের মনোবল বজায় রেখেছি।’
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা শনিবার জেলেনস্কির ওই দাবিকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘সমস্ত মিথ্যার মধ্যে জেলেনস্কির সবচেয়ে বড় মিথ্যাটি হল কিয়েভ ২০২২ সালে হোয়াইট হাউসের সমর্থন ছাড়াই লড়ে গেছে।’
বাইডেনের সময়ে জেলেনস্কি দেদার সামরিক সহায়তা পেলেও ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ওয়াশিংটনে ফেরার পরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন নীতি বদলের সূত্রপাত হয়। ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক সাহায্য কাটছাঁট করেছে আমেরিকা। ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের ‘সমীকরণ’ এর অন্যতম কারণ বলে কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন। মস্কোর সঙ্গে সমঝোতা না করলে ওয়াশিংটন অদূর ভবিষ্যতে কিয়েভকে সামরিক সাহায্য দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেবে, সে কথাও শুক্রবার স্পষ্ট করেছেন ট্রাম্প। এই নীতি কার্যকর হলে রুশ বাহিনীর সামনে কিয়েভের পতন অবশ্যম্ভাবী বলে মনে করছেন অনেকেই।
সূত্র: সিএনবিসি
এসজেড