পোপ ফ্রান্সিস আগামী ১২-১৩ সেপ্টেম্বর ভ্যাটিকান সিটিতে অনুষ্ঠিতব্য মানবভ্রাতৃত্ব বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা যমুনায় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন ভ্যাটিকানের ফন্ডাজিওনে ফ্রাতেল্লি তুত্তির মহাসচিব ফাদার ফ্রান্সেস্কো ওক্কেত্তা।
সাক্ষাতের সময় ওক্কেত্তা অধ্যাপক ইউনূসের বৈশ্বিক প্রভাবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আপনি একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা; আপনি এক বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব।’ মানবভ্রাতৃত্ব বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলনকে একটি ঐতিহাসিক আয়োজন হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও চিন্তাবিদরা ঐক্য, শান্তি এবং সামাজিক ন্যায়ের ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ গঠনের বিষয়ে মতবিনিময় করবেন। সম্মেলনে ‘টেবিলস অব হিউম্যানিটি’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি খসড়া করা হবে, যা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সার্বজনীন নীতিমালা নির্ধারণ করবে এবং পোপ ফ্রান্সিসের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী নতুন মানব সনদ গঠনের দিকনির্দেশনা দেবে।
সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে এক বিশাল জনসমাগমের প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যা এই সম্মেলনের অন্যতম প্রধান আয়োজন হবে। বৈশ্বিক কনসার্ট, আলোচনা সভা ও প্রতীকী মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনার মাধ্যমে মানবভ্রাতৃত্বের মূলনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হবে। ওক্কেত্তা অধ্যাপক ইউনূসকে জানান, বিশ্বের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ এই আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন।
সাক্ষাৎকালে অধ্যাপক ইউনূস পোপ ফ্রান্সিসের সুস্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘তিনি একজন অসাধারণ মানুষ।’ জবাবে ওক্কেত্তা বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা শুধু আপনাকে আমন্ত্রণ জানাতে আসিনি; বরং বাংলাদেশকে সমর্থন, যত্ন ও ভালোবাসা জানাতেও এসেছি।’ অধ্যাপক ইউনূস আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমি এই সম্মেলনের জন্য আগ্রহী হয়ে অপেক্ষা করছি।’
ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক ইউনূসের ‘থ্রি জিরো প্রিন্সিপল’—শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ—এর প্রতি স্বীকৃতি জানিয়েছে, যা তাঁর রূপান্তরমূলক নেতৃত্ব এবং ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই বিশ্ব গঠনের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।
thebgbd.com/NIT
