জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার তুর্কের মন্তব্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তা বিভ্রান্তিকর এবং গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
আজ সোমবার (১০ মার্চ) সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। বিবৃতিতে মানবাধিকারের প্রতি দায়বদ্ধতা ও আইনের শাসনের প্রতি সেনাবাহিনীর আনুগত্য পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে ফলকার তুর্ক ‘বিবিসি হার্ডটক’ অনুষ্ঠানে যে মন্তব্য করেন, তা কিছু গণমাধ্যম সম্প্রতি প্রচার করেছে। সেনাবাহিনী মানবাধিকার ও গঠনমূলক সমালোচনাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। তবে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে কিছু বিষয় স্পষ্ট করা জরুরি।
সেনাবাহিনী জানায়, জাতিসংঘের হাইকমিশনারের কাছ থেকে সরাসরি এ বিষয়ে কোনো বার্তা বা অভিযোগ আসেনি। যদি কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়ে থাকে, তা হয়তো তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়েছে, সেনাবাহিনীকে নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা জাতীয় নিরাপত্তা নির্দেশিকা অনুযায়ী কাজ করে এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ফলকার তুর্কের মন্তব্য কিছু মহল ভুলভাবে উপস্থাপন করছে, যা সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অতীতেও নিরপেক্ষ থেকে জনগণের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও তাদের দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১৯৯১ সালের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সময় থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন পর্যন্ত সেনাবাহিনী কোনো পক্ষপাত ছাড়াই জননিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। গত ২৩ বছরে শান্তিরক্ষা মিশনের মাধ্যমে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছে, যার সিংহভাগ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ককে গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করে। সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে যদি কোনো উদ্বেগ বা বিভ্রান্তি তৈরি হয়, তাহলে তা গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব বলে সেনাবাহিনী মনে করে।
thebgbd.com/NA