ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রোজা রাখা চ্যালেঞ্জ হতে পারে, তবে সঠিক পরিকল্পনা ও সতর্কতা মেনে চললে নিরাপদভাবে রোজা রাখা সম্ভব।
১. রোজা রাখার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ: ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে এবং ঝুঁকি কম হলে ডাক্তার রোজার অনুমতি দিতে পারেন। তবে যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি ওঠানামা করে, তাদের জন্য রোজা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
২. সেহরি ও ইফতারের সময় খাবারের পরিকল্পনা:
সেহরিতে: কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) যুক্ত খাবার যেমন— ওটস, ব্রাউন রাইস, ডাল, শাকসবজি ও চিয়া সিড খাওয়া উচিত, যা ধীরে ধীরে গ্লুকোজ সরবরাহ করে।
ইফতারে: খেজুর খাওয়া যেতে পারে, তবে ১-২টির বেশি নয়। প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবার (ডাল, মাছ, চিকেন, বাদাম) খাওয়া ভালো।
চিনি ও অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার (মিষ্টি, সফট ড্রিংক, ভাজাপোড়া) এড়িয়ে চলা উচিত।
৩. পানি ও তরল গ্রহণ:
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইফতার থেকে সেহরির মধ্যে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
৪. ওষুধ ও ইনসুলিন ব্যবস্থাপনা: যদি কেউ ইনসুলিন গ্রহণ করে, তবে রোজার সময় ডোজ ও সময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সামঞ্জস্য করতে হবে। কিছু ওষুধ হয়তো সেহরি বা ইফতারের পর নিতে হতে পারে।
৫. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা: রোজার সময় ব্লাড সুগার পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।
৭০ mg/dL-এর নিচে নামলে: রোজা ভাঙা উচিত, কারণ এটি হাইপোগ্লাইসেমিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
৩০০ mg/dL-এর ওপরে গেলে: রোজা ভাঙা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৬. অতিরিক্ত পরিশ্রম এড়িয়ে চলা: রোজার সময় ভারী কাজ বা অতিরিক্ত ব্যায়াম না করাই ভালো, কারণ এতে রক্তে শর্করা দ্রুত কমে যেতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজার পরিকল্পনা করলে নিরাপদভাবে রোজা রাখা সম্ভব। তবে রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমে গেলে বা বেড়ে গেলে রোজা ভেঙে ফেলা উচিত, কারণ ইসলামে স্বাস্থ্য রক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।