ঢাকা | বঙ্গাব্দ

রমজানের শেষ মুহূর্তে রাসুল (সা.)-এর আমল

রমজানের শেষ দশক বা শেষ মুহূর্তগুলি অত্যন্ত পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ মার্চ, ২০২৫
রমজানের শেষ মুহূর্তে রাসুল (সা.)-এর আমল ছবি : সংগৃহীত

রমজানের শেষ দশক বা শেষ মুহূর্তগুলি অত্যন্ত পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.)-এর জীবন থেকে জানা যায় যে, তিনি এই সময়টিতে বিশেষ আমল ও ইবাদত বেশি করতেন। রমজান শেষ হওয়ার আগে, রাসুল (সা.) তাঁর সমস্ত শক্তি ও পরিশ্রমকে আরও একত্রিত করতেন এবং বিশেষ কিছু আমল করতেন, যাতে তিনি আরও বেশি সওয়াব অর্জন করতে পারেন। এর মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল নিম্নরূপ:


১. ইতিকাফ: রমজানের শেষ দশ দিনে রাসুল (সা.) প্রতি বছর ইতিকাফ করতেন। এটি একটি বিশেষ ইবাদত, যেখানে মসজিদে অবস্থান করে আল্লাহর স্মরণ, দোয়া, তিলাওয়াত এবং অন্যান্য ইবাদত করা হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন:


"যে ব্যক্তি রমজানের শেষ দশ দিনের মধ্যে ইতিকাফ করে, তার জন্য সমস্ত পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করা হয়।" (সহীহ বুখারী)


২. দুআ ও মাগফিরাতের জন্য প্রার্থনা: রমজানের শেষ দশকে রাসুল (সা.) আল্লাহর কাছে মাফ, রহমত এবং নাজাত (পাপ থেকে মুক্তি) কামনা করতেন। এই সময় তিনি বিশেষভাবে দোয়া করতেন এবং আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা চাইতেন। রাসুল (সা.) বলেছেন:


"যদি কেউ রমজান মাসে ঈমানের সঙ্গে এবং সওয়াবের আশা নিয়ে রোজা রাখে, তাহলে তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।" (সহীহ বুখারী)


৩. লাইলাতুল কদরের সন্ধান: রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর (শব-ই-কদর) খুঁজে বের করার জন্য রাসুল (সা.) তার সাহাবীদের উৎসাহিত করতেন। এই রাতটি হাজার মাসের চেয়েও বরকতময়, এবং এই রাতে যারা ইবাদত করে, তাদের পাপ মাফ করে দেওয়া হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন:


"তোমরা রমজানের শেষ দশকের এক রাত্রিতে কদরের রাত খুঁজে নাও।" (সহীহ মুসলিম)


৪. যকাতুল ফিতর প্রদান: রমজান শেষে, রোজাদারদের জন্য যকাতুল ফিতর প্রদান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি রোজাদারের পাপমুক্তির জন্য এবং দরিদ্রদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন:


"রমজান শেষে প্রত্যেক রোজাদারকে যকাতুল ফিতর দিতে হবে, যাতে সে আল্লাহর কাছে পবিত্র এবং মঙ্গলময় হতে পারে।" (সহীহ মুসলিম)


৫. কোরআন তিলাওয়াত ও যিকির: রাসুল (সা.) রমজান মাসে বিশেষভাবে কোরআন তিলাওয়াত করতেন। রমজানের শেষ দশকে তিনি তিলাওয়াতের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতেন এবং আল্লাহর নামের যিকির করতেন। এটি তার ইবাদতের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল।


৬. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ: রাসুল (সা.) রমজান মাসের শেষ মুহূর্তে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন যে, তিনি এই পবিত্র মাসে ইবাদত করার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি তাঁর উম্মতকে উত্সাহিত করতেন এই মাসের সুযোগকে সদ্ব্যবহার করার জন্য।



রমজানের শেষ দশক হল আত্মবিশুদ্ধির, মাগফিরাতের (ক্ষমার) এবং আল্লাহর রহমতের জন্য শেষ সুযোগ। রাসুল (সা.) তার জীবনে এই সময়টিতে বিশেষভাবে ইবাদত করতেন এবং আমাদেরও এই সময়টিতে বেশি বেশি দোয়া, ইবাদত ও কোরআন তিলাওয়াত করার জন্য উৎসাহিত করেছেন।



thebgbd.com/NA