লিবিয়ায় অনিয়মিতভাবে অবস্থান করা এবং মানবপাচারের শিকার হওয়া ১৬৭ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ভোরে লিবিয়ার বেনগাজি ও গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ফিরে আসা এই বাংলাদেশিদের চার্টার্ড ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ফেরত আসা ১৬৭ জনের মধ্যে ১৬ জন ছিলেন বেনগাজি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে, আর বাকিরা লিবিয়ার ভয়ঙ্কর কুখ্যাত ডিটেনশন সেন্টার ‘গানফুদা’-তে আটক ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে বন্দিদশা, অপহরণ এবং নির্যাতনের শিকার হন তারা।
তাদের অধিকাংশই ইউরোপে প্রবেশের আশায় দালাল চক্রের প্রলোভনে পড়ে সমুদ্রপথে লিবিয়ায় অনুপ্রবেশ করেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা মানবপাচারকারীদের হাতে আটকে পড়েন। অনেকে হয়েছেন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার। এর আগেও বহুবার লিবিয়া থেকে এমন ফেরত আসার ঘটনা আলোচনায় এসেছে, তবে মানবপাচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ এখনো অনেকে দেখছেন না।
বাংলাদেশের ত্রিপলিতে অবস্থিত দূতাবাস, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (IOM), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা হয়। দেশে ফিরে আসা প্রত্যেককে IOM-এর পক্ষ থেকে নগদ ৬ হাজার টাকা, খাদ্যসামগ্রী, চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশে ফিরিয়ে আনা নাগরিকদের সতর্ক করে বলেন, ভবিষ্যতে কেউ যেন এই ধরনের বিপজ্জনক পথ বেছে না নেয়, এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো এখন জরুরি। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন—অবৈধ পথে বিদেশ গমন মানেই শোষণ, দুর্ভোগ এবং মৃত্যু।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও স্পষ্ট হলো—বাংলাদেশিদের ইউরোপে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর করে যারা মানবপাচারে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োজন। একইসঙ্গে দেশে ও বিদেশে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং আইনি অভিবাসন পথকে সহজতর করাও সময়ের দাবি।
thebgbd.com/NIT