জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ঝুঁকির কথা বলে হংকং থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার তিন বছরেরও বেশি সময় পর হংকংয়ে ‘প্রবাসী’ শাখা পুনরায় চালু করল মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। হংকং থেকে এএফপি জানায়, ২০১৯ সালে হংকংয়ে ব্যাপক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পর চীন অঞ্চলটিকে স্বৈরাচারী শাসনের রূপে রূপান্তর করে। আন্দোলন দমনে চীন ‘জাতীয় নিরাপত্তা আইন’ প্রয়োগ করে, যেখানে রাষ্ট্রদ্রোহ, বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
এই আইনের কারণে মানবাধিকার কর্মীদের কাজ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে—এমন মন্তব্য করে অ্যামনেস্টি ২০২১ সালে হংকংয়ের দুটি অফিস বন্ধ করে দেয়। আজ মঙ্গলবার অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ‘নতুন এই শাখা আমাদের আন্দোলনের স্থিতিশীলতা, নীরব না হওয়ার সংকল্প এবং মানবাধিকার রক্ষায় আমাদের প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করে।’
নতুন শাখাটি আনুষ্ঠানিকভাবে সুইজারল্যান্ডে নিবন্ধিত এবং এটি পুরোপুরি 'প্রবাসী অবস্থায়' প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত প্রথম শাখা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি পরিচালনা করবেন অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, তাইওয়ান, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত হংকংয়ের নির্বাসিত মানবাধিকারকর্মীরা। হংকংয়ের সাবেক আইনপ্রণেতা ও বোর্ড সদস্য ফার্নান্দো চুয়াং বলেন, ‘বিবেকবন্দীদের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিকভাবে দমন-পীড়নের বিষয়টি তুলে ধরাই আমাদের অগ্রাধিকার।’
তিনি জানান, গত সপ্তাহে ২০১৯ সালের এক পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষের ঘটনায় এক সমাজকর্মীকে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়টিও হংকংয়ের অধিকার পরিস্থিতির অবনতির উদাহরণ। চুয়াং আরও বলেন, ‘বিদেশে থাকায় আমরা আরও মুক্তভাবে কথা বলতে পারি, আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারি এবং গবেষণা ও ঘটনাপ্রতিক্রিয়া জানাতে পারি।’
চলতি মাস পর্যন্ত হংকংয়ের নিরাপত্তা আইনের আওতায় মোট ৩২২ জনকে গ্রেপ্তার ও ১৬৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই আইনের একটি চীন চাপিয়ে দিয়েছে, আরেকটি গত বছর অঞ্চলটিতে নিজস্বভাবে প্রণীত হয়েছে। এ ছাড়া হংকং পুলিশ বিদেশে অবস্থানরত ১৯ জন গণতন্ত্রপন্থী কর্মীর বিরুদ্ধে পুরস্কারও ঘোষণা করেছে। তালিকাভুক্ত একজন কর্মী জোয়ি সিউ বলেন, এই নতুন অফিসটি হংকং বা বিদেশে কঠিন সময় পার করা নাগরিকদের অনুপ্রাণিত করবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, ‘এটি নিপীড়নের বিরুদ্ধে এক সাহসী বার্তা।’
সূত্র: এএফপি
এসজেড