নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময়সীমা অন্তত ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ ১৭ এপ্রিল দুপুরে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে লিখিতভাবে এই আবেদন জমা দেয় দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনূভা জাবীন এবং সদস্য মনিরুজ্জামান। আবেদনপত্রের শিরোনাম ছিল—‘নির্বাচন কমিশন সংস্কার ও রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন’।
আবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যেই বিগত সরকার ও তাদের অধীনস্থ নির্বাচন কমিশন তিনটি জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন পরিচালনায় নানা অনিয়ম করেছে, যা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে এবং দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন।
এনসিপি দাবি করেছে, ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের পর জনগণের প্রত্যাশা থেকেই দলটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কার্যক্রম শুরু করে। এই সরকার নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে একটি কমিশন গঠন করে, যা সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। এর মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গত ১০ মার্চ রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যা তারা সমালোচনার চোখে দেখছে।
এনসিপির মতে, ২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালায় থাকা অনেক শর্ত ‘অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক’। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কার্যালয় স্থাপনের বাধ্যবাধকতা এবং পাঁচ বছর অন্তর নিবন্ধন নবায়নের নিয়ম রাজনৈতিক বহুত্ববাদ হ্রাসের উদ্দেশ্যে প্রণীত বলে দাবি করে তারা। পাশাপাশি ইসির বর্তমান কাঠামো নিয়োগের পদ্ধতি ও স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে দলটি।
তারা মনে করে, নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আইন সংশোধন করে নতুন নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করা দরকার। সেইসঙ্গে ইসি পুনর্গঠন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন হালনাগাদ, এবং সময়সীমা কমপক্ষে ৯০ দিন বাড়ানো আবশ্যক।
এদিকে একইদিন রাজধানীর বেইলি রোডে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এনসিপির উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, নির্বাচন কমিশন সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত এনসিপি নিবন্ধনের পথে হাঁটবে না। তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবে, রাজনৈতিক দলগুলো সে অনুযায়ী তাদের অবস্থান নির্ধারণ করবে। এতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
thebgbd.com/NIT