ঢাকা | বঙ্গাব্দ

মার্কিন-ইসরায়েলি জিম্মির ভাগ্য অনিশ্চিত

গাজার এক স্থানে ইসরাইলি বিমান হামলার পর আলেকজান্ডারকে আটকে রাখা ইউনিটের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
  • অনলাইন ডেস্ক | ২০ এপ্রিল, ২০২৫
মার্কিন-ইসরায়েলি জিম্মির ভাগ্য অনিশ্চিত মিছিলে আলেকজান্ডারের ছবি।

ইসরায়েলের একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে উল্লেখ থাকা যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলি নাগরিক এদান আলেকজান্ডারের ভাগ্য এখনও অনিশ্চিত বলে জানিয়েছে হামাসের সামরিক শাখা ইয্যেদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডস। শনিবার এক বিবৃতিতে তারা এ তথ্য জানায়।


হামাসের বরাত দিয়ে গাজা সিটি থেকে এএফপি জানায়, সাম্প্রতিক এক ইসরায়েলি হামলার স্থান থেকে আলেকজান্ডারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক প্রহরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, বিবৃতিতে বলা হয়, জিম্মি এবং তার সঙ্গে থাকা অন্যদের ভাগ্য সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। বৃহস্পতিবার হামাস যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে, সেখানে আলেকজান্ডারের নাম ছিল।


এর আগে এক শীর্ষ হামাস কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েল ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতি বিনিময়ে ১০ জন জীবিত জিম্মির মুক্তির প্রস্তাব দেয়, যাদের প্রথমজন হিসেবে আলেকজান্ডারের নাম উল্লেখ করা হয়। যুদ্ধ শুরুর ১৮ মাস পরও আলেকজান্ডার জীবিত বা মৃত বহু জিম্মির একজন হিসেবে গাজায় আটক রয়েছেন। মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ এক মাস আগে যে প্রস্তাব দেন, সেখানেও তার নাম ছিল।


মঙ্গলবার হামাস জানায়, গাজার এক স্থানে ইসরাইলি বিমান হামলার পর আলেকজান্ডারকে আটকে রাখা ইউনিটের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আল-কাসসাম ব্রিগেডসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা শনিবার বলেন, ‘আমরা সব জিম্মিকে রক্ষার চেষ্টা করছি, কিন্তু শত্রু বাহিনীর নৃশংস বোমাবর্ষণের কারণে তাদের জীবন হুমকির মুখে।’ ১২ এপ্রিল হামাস আলেকজান্ডারের একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে তাকে জীবিত দেখা যায়, যেখানে তিনি ইসরায়েলি সরকারের সমালোচনা করেন।


আলেকজান্ডার গাজার সীমান্তে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি অভিজাত ইউনিটের সদস্য। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় তিনি ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে বন্দি হন। সেদিনের হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের মধ্যে এখনও ৫৮ জন গাজায় বন্দি রয়েছেন, এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী ৩৪ জন ইতোমধ্যেই নিহত হয়েছেন।


শনিবার আল-কাসসাম ব্রিগেডস আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে এক ইসরায়েলি জিম্মিকে গাজায় হিব্রু ভাষায় টেলিফোনে কথা বলতে দেখা যায়। ‘হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ নামের সংগঠন জানায়, ভিডিওতে থাকা ব্যক্তি হলেন এলকানা বোহবট, যিনি ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলের একটি সঙ্গীত উৎসব থেকে অপহৃত হন।


চার মিনিটেরও বেশি দৈর্ঘ্যের ভিডিওতে বোহবটকে একটি ছোট ঘরে বসে টেলিফোনে কথা বলতে দেখা যায়। ভিডিওতে বলা হয়, তিনি তার বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন। তবে এএফপি নিশ্চিত করতে পারেনি ভিডিওটি কখন ধারণ করা হয়। ভিডিওতে বোহবটকে একটি ল্যান্ডলাইন ফোনে কথা বলতে দেখা যায়, যেখানে তিনি বন্ধুকে অনুরোধ করেন যেন তার স্ত্রীকে তার মুক্তির ব্যবস্থা করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাতে হোয়াইট হাউসে নিয়ে যান। ২৪ মার্চের পর এটি বোহবটের প্রকাশিত তৃতীয় ভিডিও।


তার পরিবার এক বিবৃতিতে জানায়, আমরা এলকানার শারীরিক ও মানসিক অবস্থার বিষয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন—সেটা সবাই দেখতেই পারছেন। তারা প্রশ্ন তোলেন, ‘একজন তরুণ শিশুর পিতাকে কেন মানবিক কারণে অবিলম্বে মুক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি?’ শনিবার রাতে তেল আবিবে অনুষ্ঠিত নিয়মিত বিক্ষোভে ইসরায়েলিরা জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে আবারও রাস্তায় নামেন।


সূত্র: এএফপি


এসজেড