ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বিশ্ববাজারে নতুন উচ্চতায় স্বর্ণের দাম, ইতিহাসে সর্বোচ্চ

  • অনলাইন ডেস্ক | ২১ এপ্রিল, ২০২৫
বিশ্ববাজারে নতুন উচ্চতায় স্বর্ণের দাম, ইতিহাসে সর্বোচ্চ ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক বাজারে সোমবার (২১ এপ্রিল) নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণের দাম। একই সময়ে ডলারের মান আরও কমে গেছে এবং বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এই পরিস্থিতির পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও ফেডারেল রিজার্ভের সঙ্গে চলমান উত্তেজনাকেই বড় কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। খবর এনডিটিভির। 


ইস্টার ছুটির কারণে এখনও অনেক বাজার বন্ধ থাকলেও, সামনে আসছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য, যা ট্রাম্পের ‘ট্রেড ওয়ার’ বা বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেবে।


এদিকে, বিশ্বের কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর শুল্ক থেকে রেহাই পেতে। এর মধ্যে জাপান অন্যতম। তবে চীন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—নিজের স্বার্থে কোনো ধরনের আপস তারা মেনে নেবে না।


চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “আপস শান্তি বয়ে আনে না, বরং সেটিকে দুর্বলতা হিসেবে দেখা হয়।” তারা আরও বলেছে, “নিজের স্বল্পমেয়াদি লাভের জন্য অন্যের ক্ষতি করা মানে বাঘের চামড়া টেনে নেওয়ার মতো—শেষে উভয় পক্ষেরই ক্ষতি হয়।”


ট্রাম্প অবশ্য গত সপ্তাহেই বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শুল্ক নিয়ে আলোচনা চলছে এবং তিনি আশাবাদী যে দুই দেশের মধ্যে একটা ভালো চুক্তি হবে।


বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদের দিকে ঝুঁকছেন। এরই মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৩৮৪ ডলার ছাড়িয়েছে, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডলারের পতনও এতে বড় ভূমিকা রেখেছে।


ডলারের দুর্বলতার পেছনে রয়েছে ট্রাম্প ও ফেডের গভর্নর জেরোম পাওয়েলের মধ্যে চলমান মতবিরোধ। ট্রাম্প সম্প্রতি প্রকাশ্যে পাওয়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, বলেছিলেন—“চাইলে তাকে আমি দ্রুত সরিয়ে দিতে পারি।” তবে পাওয়েল পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না এবং ফেডের স্বাধীনতা আইনসিদ্ধ।


ফরাসি অর্থমন্ত্রী এরিক লমবার্ড বলেন, “ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক শুল্কনীতি ডলারের উপর আস্থা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে। যদি পাওয়েলকে জোর করে সরানো হয়, তবে এই আস্থার আরও বড় ধাক্কা খাবে মার্কিন বন্ডবাজার।”


সপ্তাহের শুরুতে শেয়ারবাজারেও ছিল মিশ্র প্রবণতা। টোকিও ও তাইপে কমে গেলেও সাংহাই, সিউল, সিঙ্গাপুর, ম্যানিলা ও জাকার্তায় সূচক বেড়েছে। অপরদিকে, বৈশ্বিক চাহিদা নিয়ে শঙ্কায় তেলের দাম কমেছে।


বিশ্বজুড়ে এপ্রিল মাসের উৎপাদন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা, যা ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রাথমিক প্রভাব বোঝাতে সহায়ক হবে।


এসপিআই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের স্টিফেন ইনেস বলেন, “যেটা এখন পুরোপুরি পরিষ্কার—মার্কিন নীতিনির্ধারণার ওপর আগের মতো আস্থা আর নেই। এটি এখন এক ধরনের ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় পরিণত হয়েছে।”


thebgbd.com/NIT