ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি প্রসঙ্গে ইসলামে যা এসেছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ এপ্রিল, ২০২৫
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি প্রসঙ্গে ইসলামে যা এসেছে ফাইল ছবি

বর্তমান সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা—ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি। কেউ কেউ ধর্মের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অতিরঞ্জিত ধারণা সৃষ্টি করেন, যা ইসলামের মূল দর্শনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইসলাম এমন একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা, যেখানে সহজতা, ভারসাম্য ও সহনশীলতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ধর্মে বাড়াবাড়ি বা চরমপন্থা সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে।


কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের উদাহরণ টেনে মুসলিমদের সাবধান করে বলেন. "হে আহলে কিতাব! তোমরা তোমাদের দীন সম্পর্কে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ সম্পর্কে সত্য ছাড়া কিছু বলো না" (সূরা আন-নিসা: ১৭১)।


এই আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, ধর্মীয় ক্ষেত্রে সীমা অতিক্রম করা ইসলাম সমর্থন করে না।


নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর হাদীসেও এই বিষয়ে একাধিক বার্তা এসেছে। তিনি বলেন, "ধর্মে বাড়াবাড়ি করো না, কারণ তোমাদের পূর্ববর্তীরা ধর্মে বাড়াবাড়ির কারণেই ধ্বংস হয়েছে" (সহীহ মুসলিম)।


অন্যত্র তিনি বলেন, "এই দ্বীন সহজ, অতএব যে ব্যক্তি দ্বীনের ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করে, সে দ্বীনকে টিকিয়ে রাখতে পারবে না। বরং সহজ পথ অবলম্বন করো" (সহীহ বুখারি)।


ধর্মের মূল উদ্দেশ্য মানুষের আত্মশুদ্ধি, নৈতিক উন্নয়ন এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা। ইসলাম কখনোই এমন কোনো কর্মপন্থাকে সমর্থন করে না যা মানুষকে কষ্টে ফেলে, সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ায় বা অন্যের প্রতি সহিংসতা তৈরি করে।


ইসলামের নবী (সা.) এর জীবনে আমরা ভারসাম্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত দেখতে পাই। তিনি সাহাবীদের অতিরিক্ত ইবাদতের প্রতি নিষেধ করে বলেন, "তোমাদের কারও যদি রাতভর ইবাদতের অভ্যাস হয়, তাহলে সে যেন এটাকে নিয়মিত না করে, কারণ তোমার শরীর, তোমার চোখ, তোমার পরিবার—সবারই তোমার ওপর হক রয়েছে" (সহীহ বুখারি)।


ইসলামে বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণের উদ্দেশ্য স্পষ্ট—ধর্ম হোক হৃদয়ের প্রশান্তি ও সমাজে স্থিতিশীলতার উৎস, কষ্টের বা হিংসার নয়।


ধর্ম পালন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা যেন চরমপন্থায় না গড়ায়। ইসলামের সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে তার ভারসাম্যপূর্ণ ও সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গিতে। তাই ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নয়, বরং সচেতন ও সংযত জীবনযাপনই ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা।


thebgbd.com/NIT