যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে আঞ্চলিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে জাপান এবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দিকে ঝুঁকছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন সফর করবেন বলে বুধবার জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
টোকিও থেকে এএফপি জানায়, ঠিক এক সপ্তাহ আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরের পরপরই২৭ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই সফরটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বেইজিং এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হিসেবে নিজেদের স্থিতিশীল অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, যা বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির একটি কেন্দ্র এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল—এর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করাকে জাপানের কূটনীতির শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ লাখেরও বেশি জনসংখ্যাসম্পন্ন ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে, ফলে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বিশেষ গুরুত্বের।’
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত সপ্তাহে ভিয়েতনামকে আহ্বান জানান যুক্ত হয়ে ‘একতরফা দমনের বিরুদ্ধে’ দাঁড়াতে এবং ‘বৈশ্বিক মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে।’ এর কিছুক্ষণ পরই ট্রাম্প মন্তব্য করেন, শি’র হ্যানয় সফরের লক্ষ্য ছিল ‘যুক্তরাষ্ট্রকে ঠকানো’। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং দেশটিতে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী হয়েও জাপান ট্রাম্পের আরোপিত গাড়ি, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের আমদানি শুল্কের চাপে রয়েছে।
এদিকে কিছু জাপানি কোম্পানি—যার মধ্যে ভিডিও গেম নির্মাতা নিন্টেন্ডোর নামও রয়েছে—উৎপাদন কার্যক্রম ভিয়েতনাম ও প্রতিবেশী কম্বোডিয়ায় স্থানান্তর করছে, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব এড়ানোর জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ফিলিপাইনের সরকারি এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইশিবা আগামী মঙ্গলবার ও বুধবার দেশটি সফর করবেন। সফরকালে তার সঙ্গে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মারকোসের বৈঠকে অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগিতা, রাজনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সংলাপ এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ উন্নয়নের বিষয়গুলোতে আলোচনা হবে।
ফিলিপাইন ও জাপান ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা অংশীদার, এবং পারস্পরিক সৈন্য মোতায়েন সংক্রান্ত একটি চুক্তি জাপানের সংসদে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতে উভয় দেশ চীনের দক্ষিণ চীন সাগরে বির্তকিত কর্মকাণ্ডের মোকাবিলায় যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। জাপান ফিলিপাইনের ‘সমুদ্র নিরাপত্তা’ এবং ‘নৌ সুরক্ষা সক্ষমতা’ বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিও দেয়।