মাদারীপুর জেলা সদরের পুরানবাজারের কাঁচাবাজার থেকে রাস্তি ইউনিয়নের কুমার নদের পাড় পর্যন্ত আধা কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার কাজের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। নিম্নমানের কাজ করতে বাঁধা দিতে গিয়ে ঠিকাদারের লোকজন ও স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা এবং হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে।
অভিযোগ উঠেছে, প্রায় সোয়া কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ করছে রাস্তি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেল্লাল হোসেন নিজেই। ফলে সিডিউল অনুসারে কাজ না করার অভিযোগ রয়েছে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রাস্তার সংস্কার করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিমেন্টের পরিমাণ কম দিয়ে নামমাত্র পাথর দিয়ে বেশি পরিমাণ বালুর ব্যবহার করছেন। দায়সারা কাজ করা হলে অল্পদিনের মধ্যেই রাস্তা দেবে যাবে।
জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি সদর উপজেলার রাস্তির পুরান বাজার থেকে কুমার নদেরপাড়ের ব্যবসায়ীদের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম। রাস্তা তৈরিতে উপকরণ কম এবং মালামাল নিম্নমানের হলে অল্প কিছু দিনের মধ্যে রাস্তাটি ব্যবহারে অযোগ্য হয়ে পড়বে।
ফলে গ্রামবাসী বাঁধা দিতে গেলে চেয়ারম্যান নিজে ও তার লোকজন তাদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। এলাকাবাসী নিম্নমানের কাজের জন্যে ঠিকাদার ও সরকারি লোকজনকে দায়ী করেন।
মিঠু হাওলাদার নামে একজন বলেন, ‘রাস্তাটি আমাদের প্রাণের দাবি ছিল। যে কারণে স্থানীয় সাংসদ শাজাহান খানের প্রচেষ্টায় কাজটি শুরু হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন কম সিমেন্ট দিয়ে বেশি বালু আর খোয়া দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করছে। ফলে যে কোনো সময় রাস্তাটি দেবে যাবে। এছাড়া পুরানো ইট দিয়ে গাইড লাইন তৈরি করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি ঠিকাদারকে বলার পরেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এমনকি তাদের বাঁধা দিতে গিয়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে।
হাতাহাতির বিষয়টি জেনে সদর উপজেলা প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন ও এসও হেল্লাল হোসেন গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এক কোটি ১৫ লাখ টাকা মূল্যে মেসার্স ইসতি এন্টারপ্রাইজেই নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পেলেও বাস্তবায়ন করছে রাস্তির চেয়ারম্যান বেল্লাল হোসেন নিজেই।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যাদেশ পেয়ে এবছরের ডিসেম্বরে কাজটি শেষ করার কথা রয়েছে। তবে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি উপজেলা প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন। এছাড়া ঠিকাদার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি নয়। তিনি বিষয়টি এলজিইডির সঙ্গে বুঝবেন বলে হুমকি দেন।