ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সঞ্চয়পত্র-সহ অন্তত ১০টি সেবায় রিটার্ন বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা

এতে করে পাঁচ লাখ টাকা বা তার বেশি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলেও আর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র (পিএসআর) দেখাতে হবে না।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৬ মে, ২০২৫
সঞ্চয়পত্র-সহ অন্তত ১০টি সেবায় রিটার্ন বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা ফাইল ছবি

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্রসহ অন্তত ১০টি সেবায় আয়কর রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে করে পাঁচ লাখ টাকা বা তার বেশি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলেও আর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র (পিএসআর) দেখাতে হবে না।


এনবিআরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এই নীতিমালায় পরিবর্তনের আওতায় ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা বা তার বেশি টাকার মেয়াদি আমানত খোলার ক্ষেত্রেও একইভাবে রিটার্ন দাখিলের শর্ত শিথিল করা হচ্ছে। চিকিৎসক, আইনজীবী, ইঞ্জিনিয়ার, স্থপতি, হিসাববিদসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ বা তা বজায় রাখার ক্ষেত্রেও আর রিটার্ন দাখিলের প্রয়োজন থাকবে না। তবে এসব ক্ষেত্রেই ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) থাকা বাধ্যতামূলক থাকবে।


বর্তমানে দেশে মোট ৪৫টি সরকারি ও বেসরকারি সেবার ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। এর উদ্দেশ্য ছিল করদাতার সংখ্যা বাড়ানো, কিন্তু বাস্তবে এতে কর আদায়ের হার বাড়েনি, বরং সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির মুখে ফেলেছে।


২০২৩ সালের আয়কর আইনে বলা আছে, যেসব ক্ষেত্রে পিএসআর বাধ্যতামূলক, সেগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি তা যাচাইয়ে ব্যর্থ হলে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এই ভয়ে বহু সাধারণ মানুষ যাদের প্রকৃত করযোগ্য আয় নেই, তারাও বাধ্য হয়ে শূন্য রিটার্ন জমা দিচ্ছেন।


এনবিআরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “পিএসআরের জায়গায় যেখানে প্রয়োজন নেই, সেখানে শুধু টিআইএন জমা দিলেই চলবে—এই নীতিতে যেতে চাই আমরা। এতে জনভোগান্তি কমবে এবং করব্যবস্থা আরও মানবিক হবে।”


এনবিআরের সাবেক সদস্য (করনীতি) ড. সৈয়দ আমিনুল করিম বলেন, “যাদের করযোগ্য আয় নেই, তাদের জন্য এটা বিশাল স্বস্তির বিষয়। বিশেষ করে বিধবা বা অবসরপ্রাপ্ত নারীদের ক্ষেত্রে, যাদের আয়ের উৎস না থাকলেও সঞ্চয়পত্র থাকে, তাদের জন্য এটি বহুদিনের অপেক্ষিত পদক্ষেপ।”


২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথমবার ৩৮টি সেবার ওপর পিএসআর বাধ্যতামূলক করা হয়। পরবর্তী বছরে আরও ছয়টি যোগ হয়ে বর্তমানে মোট ৪৫টি সেবার ক্ষেত্রে এ শর্ত বলবৎ আছে। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে অন্তত ১০টি সেবা থেকে এই বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হতে পারে বলে আভাস মিলেছে।


thebgbd.com/NIT