উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ায় আপন ছোট ভাই শাহাদাৎ হোসেনকে ভাই নয় বলে অস্বীকার করে ‘কুলাঙ্গার’ বললেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তারা দুজনই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।
গত মঙ্গলবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় বসুরহাট পৌরসভার সরকারি মিলনায়তন ব্যবহার করে সমর্থিত চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের সমর্থনে বসুরহাট বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কাদের মির্জা ভাইকে অস্বীকার করে বক্তব্য দেন। তার বক্তব্যটি স্থানীয় একাধিক সাংবাদিক ফেসবুকে লাইভে প্রচার করেন। নিজের স্বার্থের জন্য ভাইকে অস্বীকার করে প্রকশ্যে দেয়া কাদের মির্জার ওই বক্তব্য নিয়ে স্থানীভাবে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
শাহদাত হোসেন প্রার্থী হওয়ার পর হলফনায় মামলার তথ্য না দেয়ায় এবং আয়-ব্যায়ের বিবরণী না থাকায় প্রথমে যাচাই-বাছাইয়ে পরবর্তীতে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে আপীলে প্রার্থীতা বাতিল হয়। পরবর্তীতে তিনি হাইকোর্টে রিট আবেদন করে প্রার্থীতা ফিরে পান এবং টেলিফোন প্রতীক বরাদ্দ পান।
মতবিনিময় সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আজকে ওবায়দুল কাদের ঘুমাতে পারে না, একটা ছেলের জন্য। সে আমার ভাই নয়, ওবায়দুল কাদেরের ভাই নয়। ওবায়দুল কাদরে সাহেব ষ্টেটমেন্ট দিয়ে বলেছে- পত্রিকাতে যে কোন মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়-স্বজন নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে না।
আজকে আমাদের ভাই নয় এই কুলাঙ্গা শাহাদাইচ্ছা (শাহদাত)। তার কারণে আজকে ওবায়দুল কাদের অসহায়, সাংবাদিকদের সামনে গেলে চেহারা কালো হয়ে যায়, কি জানি আবার জিজ্ঞাসা করে। শেখ হাসিনার কাছে আজকে জবাব দিতে পারে না।
কাদের মির্জা বলেন, ‘সে (শাহদাত) আজকে কোর্টে কোর্টে ঘুরছে। কাদের ইঙ্গিতে এ ষড়যন্ত্র হচ্ছে একদিন প্রকাশ হবে ইনশাআল্লাহ। ওবায়দুল কাদেরের ইজ্জত যেই ছেলে নষ্ট করে সেই ছেলেকে যদি ভোটে আসে ভোট দেওয়া যায়? ...না। ওবায়দুল কাদের যার জন্য অপমানিত হয়েছে, আপনারা যারা আওয়ামী লীগ করেন ওই ছেলেকে ভোট দেয়া যাবে না, সে যেই হোক। আল্লাহর গজব পড়বে এই ছেলের ওপরে।’
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ছোট ভাই শাহদাতের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘একটা শালিস তার জন্য করতে পারি না পৌরসভাতে। শালিসে রায় দিলে, যে হেরে যায়, সে তার পক্ষ হয়। শালিস বাস্তবায়ন করতে পারে না এই ছেলের কারণে। এই ছেলেকে ঘৃণা ভরে যদি প্রত্যাখ্যান না করেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব যদি মারা যান, তার আত্মার শান্তি পাবে না। হেতের কে ভোট দিবে? আপনার দিবেন কেউ? ...না।’
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত আবুল খায়ের নামে বসুরহাট বাজারের এক ব্যবসায়ীকে শাহদাত হোসেনের পক্ষ অবলম্বন করার অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যে অশ্লীল ভাষায় নানা অপমানমূলক কথা বলেন এবং ভবিষ্যতে তাকে বসুরহাট বাজারে প্রতিহত করার এবং বিতাড়িত করার ঘোষণা দেন।
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমার কষ্টে বুক ফেটে যায়, আমি হচ্ছি পৌরসভার মেয়র। সে আমার বয়সে অনেক ছোট। সে উপজেলা চেয়ারম্যান হবে, এটা কেমন কথা? আপনারা বলেন? আমার ইজ্জত থাকবে? আমি আপনাদের কাছে করজোড় অনুরোধ করবো একটা ভোটও ওই ছেলেকে দিবেন না। আপনারা আমাদের প্রার্থীদের ভোট দিবেন। আমি বসুরহাট বাজারের শান্তি রক্ষার জন্য যা যা করার আমি সবকিছু করবো।’
প্রসঙ্গত, তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ জুন
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।