ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তা জোরদারে ‘জরুরি’ আলোচনার জন্য ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের মন্ত্রীদের স্বাগতম জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। যুদ্ধবিরতির জন্য মস্কোকে দেওয়া আলটিমেটামের দুই দিন পর আজ সোমবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
লন্ডন থেকে এএফপি জানায়, ‘ভাইমার প্লাস’ নামে পরিচিত জোটের এই বৈঠকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, পোল্যান্ড, স্পেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে সমন্বয় করতে জোটটি গঠিত হয়।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ল্যামি আজ রাশিয়ার আগ্রাসনে সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরিকল্পনা করছেন। এর আগে শনিবার ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের নেতারা কিয়েভ সফর করেন। সেখানে তারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বসেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণে এক যৌথ বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতি ৩০ দিনের জন্য ‘নির্বিশেষ’ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
এটি ‘ভাইমার প্লাস’ জোটের ষষ্ঠ বৈঠক হলেও যুক্তরাজ্যে এটি প্রথমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলোচনায় মূলত ইউরোপীয় নিরাপত্তা এবং ইউক্রেনের জন্য একটি ‘ন্যায়সঙ্গত ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি’ নিশ্চিতের উপায় নিয়েই আলোচনা হবে। জার্মানি, স্পেন ও পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পাশাপাশি ফ্রান্সের পক্ষ থেকে ইউরোপ বিষয়ক মন্ত্রী বেঞ্জামিন হাদ্দাদ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান কূটনীতিক কায়া কাল্লাস অংশ নিচ্ছেন।
আলোচনার প্রাক্কালে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যামি বলেন, ‘আজকের এই চ্যালেঞ্জ কেবল ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নয়—সমগ্র ইউরোপের জন্য এটি একটি অস্তিত্বগত হুমকি। আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের লন্ডনে এনেছি এই বার্তা দিতে যে, সার্বভৌমত্ব ও শান্তির পক্ষে এবং ইউক্রেনের পাশে আমরা সবাই একসঙ্গে দাঁড়িয়েছি।’
অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রোববার জানিয়েছেন, তিনি ১৫ মে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসতে চান। তবে ইউরোপীয় দেশগুলোর দাবি অনুযায়ী সোমবার থেকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া তিনি জানাননি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি পুতিনের সঙ্গে তুরস্কে বৈঠকে রাজি আছেন। তবে রাশিয়া যুদ্ধবিরতি না মানলে তিনি বৈঠকে যাবেন কি না, তা স্পষ্ট করেননি।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এ ব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন, পুতিন কেবল ‘সময় কেনার চেষ্টা’ করছেন। তিনি পোল্যান্ডের প্রজেমিসল শহরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটি ‘নির্বিশেষ যুদ্ধবিরতি’র আগে কোনো আলোচনা হয় না, এটিই এর সংজ্ঞা।’ পরে এলিসি প্রাসাদের এক বিবৃতিতে ম্যাক্রোঁ আবারও ‘যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা’ পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বলেন, যুদ্ধবিরতি ছাড়া কোনো উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ফলপ্রসূ হতে পারে না।
সূত্র: এএফপি
এসজেড