ইসলামে কোরবানি হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের এক মহৎ ইবাদত, যা ঈদুল আযহার প্রধান রিতিতে অন্যতম। প্রতি বছর মুসলিমরা নির্দিষ্ট পশু কোরবানি দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় ত্যাগ ও আনুগত্য প্রদর্শন করেন। তবে কোরবানির পশুর ব্যাপারে শাস্ত্রীয়ভাবে কিছু স্পষ্ট বিধান রয়েছে, যা মেনে চলা আবশ্যক।
কোরবানির পশুর তালিকা ও শর্ত
কোরবানি প্রদানের জন্য ইসলামে অনুমোদিত পশু হল— গরু, ছাগল, ভেড়া এবং উট। এই পশুগুলোকে ‘হালাল কোরবানি পশু’ হিসেবে গণ্য করা হয়। এগুলো জীবনের জন্য মানুষকে উপকারে আসে এবং শরীয়ত এই পশুগুলোকে উৎসর্গ করার কথা বলে।
ঘোড়ার অবস্থান কোরবানির পশু হিসেবে
ঘোড়া ইসলামিক শরীয়তে কোরবানির পশুর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয়। হাদিস এবং ফিকহের গ্রন্থে স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, ঘোড়া কোরবানির জন্য গ্রহণযোগ্য পশু নয়। ঘোড়া সাধারণত আরবী সমাজে যুদ্ধে এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু ঈদের কোরবানি হিসেবে কখনো বিবেচিত হয়নি।
শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা ও কারণ
ঘোড়াকে কোরবানির পশু হিসেবে গ্রহণ না করার পেছনে কয়েকটি কারণ উল্লেখযোগ্য:
হাদিসের ভিত্তি: সাহাবা ও তাবেউনের যুগ থেকে ঘোড়া দিয়ে কোরবানি দেওয়ার কোনো প্রমাণ নেই, বরং নবী করীম (সা.) এবং তাঁর সাহাবারা স্পষ্টভাবে কোরবানির পশুর সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করেছেন।
উপযোগিতা ও উদ্দেশ্য: কোরবানির পশুর প্রধান উদ্দেশ্য হলো মানুষের খাদ্য হিসেবে প্রসারিত হওয়া। ঘোড়ার মাংস সাধারণত মুসলিম সমাজে প্রিয় বা গ্রহণযোগ্য নয়।
শরীয়ত নির্ধারিত বিধান: ইসলামের ফিকহ বিভাগ ঘোড়াকে কোরবানির পশু হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি, তাই ঘোড়া দিয়ে কোরবানি করা অবৈধ এবং গৃহীত নয়।
অন্য পশু দিয়ে কোরবানির বিকল্প
যদি ঘোড়া দিয়ে কোরবানির চিন্তা থাকে, তাহলে ইসলামী শরীয়তের নির্দেশিত পশু যেমন গরু, ছাগল, ভেড়া বা উট থেকে কোরবানির পশু নির্বাচন করা উচিত। এসব পশু শরীয়তে অনুমোদিত এবং সঠিকভাবে কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য।
ঘোড়া দিয়ে কোরবানি দেওয়া ইসলামিক শরীয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। কোরবানির পশু নির্বাচন করার সময় অবশ্যই শরীয়তের বিধান মেনে চলা উচিত। ঈদুল আযহার ইবাদতকে সফল ও পূর্ণতা দেওয়ার জন্য অনুমোদিত পশুতে কোরবানি দেয়া একান্ত প্রয়োজনীয়। এতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব হয় এবং ইসলামী শাসন ও ঐতিহ্য রক্ষা পায়।
THEBGBD.COM/NA