বরগুনার বেতাগী উপজেলার কেওড়াবুনিয়া এলাকার খালে মাছ ধরতে যায় আব্দুল কাইউম দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সন্ধ্যার দিকে মাছের জাল তোলার সময় খালের পানিতে ডুবে যায় কাইউম। খবর পেয়ে কাইউমের খালা ও চাচাতো বোন তাকে উদ্ধার করে।
পরে কাইউমের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে প্রথমে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলজে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে ২৭ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে তার অস্ত্রোপচার শুরু হয়।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার কেওড়াবুনিয়া এলাকার জমাদ্দার বাড়ির বাসিন্দা কৃষক সিদ্দিক জমাদ্দারের ছেলে আব্দুল কাইউম। তিনি বর্তমানে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। শুক্রবার (১৭ মে) এ বিষয়টি জানা যায়।
শিক্ষার্থী আব্দুল কাইউম বলেন, খাল খনন করায় সেখানে গভীরতা বেশি হওয়ায় ঠাঁই পাচ্ছিলাম না। এর মধ্যেই মাছটি হাত থেকে ছুটে গেলে মুখ খুলে ডুব দিই। তখনই মাছটি আমার গলার মধ্যে ঢুকে যায়। কোনোভাবে আমি খাল থেকে পাশের রাস্তায় উঠতে পারলেও শ্বাস নিতে পারছিলাম না। এসময় স্বজনদের ডাক দিয়ে পেটের মধ্যে বাইন মাছ চলে যাওয়ার কথা বলি।
হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. মোস্তফা কামাল বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার পর অক্সিজেন লাগানো অবস্থায়ও রোগী হাঁসফাঁস করছিল। রোগীর বাবা জানায় গলায় বাইন মাছ চলে যাওয়ার কথা। শুরুতে গলা চেক কোথাও কোনো মাছের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, তবে শ্বাসে মাছের গন্ধ ছিল।
রোগীর অবস্থা খারাপ থাকায় এক্সরে করার সুযোগ না থাকলেও নানা লক্ষণে আমরা বুঝতে পারি মাছটি শ্বাসনালীতে চলে গেছে। পরে সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় শ্বাসনালী কেটে বাইন মাছটি বের করা হয়।
হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসক সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, অসাবধানতার কারণে বড় একটি বাইন মাছ রোগীর শ্বাসনালীতে চলে যায়। এতে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় মৃত্যু ঝুঁকি দেখা দেয়। তিন ঘণ্টার চেষ্টায় শ্বাসনালী কেটে বাইন মাছটি বের করা হয়। এরপর রোগী সুস্থ হলে ৭-৮ দিন পর তার শ্বাসনালীতে বসানো টিউব অপসারণ করা হয়।