নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বর্নো রাজ্যে ল্যান্ডমাইনে বিস্ফোরণে জিহাদিবিরোধী একটি মিলিশিয়া দলের আট সদস্য নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরে মার্ট ও দিকোয়া শহরের মাঝামাঝি স্থানে এই ঘটে বলে মিলিশিয়া বাহিনীর একজন নেতা জানিয়েছেন। নিহতরা সবাই একটি স্থানীয় মিলিশিয়া দলের সদস্য। তারা জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নাইজেরিয়ান সেনাবাহিনীকে সহায়তা করত। কানো থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
লেক চাদ এলাকার মার্টে শহরে একটি সেনাঘাঁটিতে জিহাদিদের হামলা প্রতিহত করে তারা রাজধানী মাইদুগুরি ফিরছিল। পথেই তাদের গাড়ি একটি পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইনের ওপর উঠে গেলে বিস্ফোরিত হয়। এতে গাড়িতে থাকা সবাই ঘটনাস্থলেই নিহত হন বলে জানিয়েছেন মিলিশিয়া নেতা বাবাকুরা কোলো। আরেক নেতা ইব্রাহিম লিমান বলেন, মরদেহগুলো মাইদুগুরি শহরে এনে রাখা হয়েছে এবং বুধবার সকালে তাদের দাফন সম্পন্ন হবে।
তিনি আরো জানান, মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে মার্ট শহরের একটি সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে চার সেনাসদ্যকে হত্যা করে ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি)। পরে অস্ত্র লুট করে ঘাঁটিটি পুড়িয়ে দেয় তারা। ওই হামলার পর থেকে সেখানে সেনাদের সঙ্গে টহলের দায়িত্বে ছিলেন এই মিলিশিয়া সদস্যরা।
মঙ্গলবার নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা মার্টে ঘাঁটিতে জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করেছে। বিমান বাহিনীর সহায়তায় পালিয়ে যাওয়া বহু সন্ত্রাসীকে হত্যা বা নিস্ক্রিয় করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই সেনা সদস্য নিহত হন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বর্নো ও আশপাশের আদামাওয়া ও ইয়োবে রাজ্যে বোকো হারাম এবং আইএসডব্লিউএপি-এর হামলা বেড়েছে। গত দুই মাসে এই জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো এক ডজনেরও বেশি সেনাঘাঁটি দখল করেছে বলে এএফপির পরিসংখ্যানে জানা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, গত ১৬ বছরে নাইজেরিয়ায় জিহাদবিরোধী সংঘাতে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২০ লাখ মানুষ। এই সহিংসতা কেবল নাইজেরিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। তা ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দেশ নাইজার, চাদ ও ক্যামেরুনেও। ফলে এই অঞ্চলের দেশগুলো মিলে একটি যৌথ সামরিক জোট গঠন করেছে, যা এই জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র: এএফপি
এসজেড