ইসলামপূর্ব যুগে বিভিন্ন ধর্ম ও সমাজে কোরবানির ধারণা ছিল বহুল প্রচলিত এবং তা মানুষের বিশ্বাস ও জীবনযাত্রার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত ছিল। প্রাচীন কাল থেকে মানুষ ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা, পাপ মোচন বা আশীর্বাদ লাভের জন্য পশু বা অন্যান্য মূল্যবান জিনিস কোরবানি হিসেবে দিত। বিভিন্ন ধর্ম ও সভ্যতায় কোরবানির উদ্দেশ্য ও প্রথা আলাদা হলেও এর মূল ভাব ছিল সৃষ্টিকর্তার কাছে আত্মসমর্পণ ও আনুগত্য প্রকাশ।
ইহুদি ধর্মে কোরবানির চর্চা ছিল বিস্তৃত। তারা পবিত্র উৎসব, যেমন ইয়ম কিপ্পুর ও পাসওভার উৎসবে পশু কোরবানি করত। তাদের বিশ্বাস ছিল ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য ও পাপের ক্ষমা প্রার্থনায় কোরবানি গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতে কোরবানির বিস্তারিত বিধান পাওয়া যায়।
খ্রিস্টান ধর্মেও প্রাচীন সময়ে পশু বা অন্য কিছু উৎসর্গ করার রীতি ছিল, যদিও নবযুগের সঙ্গে সঙ্গে যিশুর আত্মত্যাগের কারণে পশু কোরবানির গুরুত্ব কমে যায়। তবে প্রাচীন খ্রিস্টান সমাজে ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য ও পবিত্রতার প্রকাশে কিছু উৎসর্গের রীতি ছিল।
আরবি ও অন্যান্য অদ্বৈত ধর্মেও কোরবানির রীতি ছিল প্রচলিত। তারা বশীভূত ঈশ্বর বা দেবতাদের সন্তুষ্টির জন্য পশু বলি দিত। এই বলি প্রধানত শিকার করা বা পালনকৃত পশু হতে পারে। মক্কায় কাবা শরিফের আশেপাশে প্রাচীন আরবরা বিভিন্ন উৎসবে কোরবানির রীতি পালন করত।
সার্বিকভাবে, ইসলাম আগমনের আগে বিভিন্ন ধর্মে কোরবানির প্রথা ছিল মানুষের বিশ্বাস ও ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধার বহুমাত্রিক প্রকাশ। ইসলামের আসার পর এই প্রথাকে পরিমার্জিত ও বিশুদ্ধ করে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সীমাবদ্ধ করা হয়।
thebgbd.com/NA