রাতের বেলা হঠাৎ খিদে লাগা অনেকের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং পরের দিনের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এ কারণে রাতের সময় খিদে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি। আসলে রাতে কেন খিদে বেশি লাগে? রাতের সময়ে শরীর কিছুক্ষণ খাবার থেকে দূরে থাকে, তখন রক্তের গ্লুকোজ লেভেল কমে যায়, ফলে হঠাৎ ক্ষুধা অনুভূত হয়। এছাড়া মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং পানিশূন্যতাও এই সমস্যা বাড়াতে পারে। তবে কিছু খাবার আছে যেগুলো রাতের ক্ষুধা কমাতে বিশেষভাবে কার্যকর।
প্রথমত, প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন দুধ, দই, পনির বা বাদাম খেলে শরীর দীর্ঘ সময় তৃপ্ত থাকে। প্রোটিন শরীরের পাচনতন্ত্রকে ধীরে কাজ করতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার স্তর স্থিতিশীল রাখে, যার ফলে মাঝরাতে হঠাৎ ক্ষুধা কম হয়। বিশেষ করে দুধে থাকা ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নিঃসরণ বাড়ায়, যা ঘুম উন্নত করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
দ্বিতীয়ত, আঁশযুক্ত খাবার যেমন ওটমিল, ব্রাউন রাইস, সম্পূর্ণ শস্যের রুটি বা শস্যের কেক খেলে দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধার অনুভূতি দেরি হয়। এই ধরনের খাবার পচনে সময় বেশি লাগে, ফলে শরীরে শর্করার ধীরে ধীরে মুক্তি ঘটে এবং ব্লাড সুগার লেভেল স্থিতিশীল থাকে।
তৃতীয়ত, ফলমূল যেমন কলা, আপেল বা স্ট্রবেরি রাতের খিদে কমাতে সাহায্য করে। এগুলোতে থাকা ফাইবার ও প্রাকৃতিক শর্করা ধীরে হজম হয়, যা দীর্ঘ সময় পেট ভর্তি রাখে। এছাড়া ফলের ভিতরে থাকা নানা ভিটামিন ও খনিজ শরীরের পুষ্টি জোগায় এবং মানসিক চাপ কমায়।
চতুর্থত, কিছু বাদাম যেমন কিসমিস, বাদাম ও কাজু নিয়মিত খেলে রাতে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে আসে। এগুলোতে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি ও প্রোটিন শরীরকে শক্তি দেয় এবং ক্ষুধা কমায়।
পাঁচমত, ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় যেমন চা-কফি এড়িয়ে চলুন। এগুলো শরীরকে উত্তেজিত করে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং খিদে বাড়াতে পারে।
সবশেষে, পানি পান করাও খুব জরুরি। অনেক সময় শরীর পানিশূন্যতায় ক্ষুধা অনুভব করে। রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানি খেলে খিদে কমে এবং শরীর হাইড্রেটেড থাকে।
এই খাবারগুলো নিয়মিত রাতের খাবারের অংশ করলে ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করলে মাঝরাতে খিদে লাগা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ঘুমের গুণগত মান উন্নত হয় এবং পরবর্তী দিনের কর্মক্ষমতা বাড়ে। তবে কোনো খাবারে এলার্জি বা স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
thebgbd.com/NA