ঈদুল আজহার আগমন উপলক্ষে কোরবানির পশু কেনাকাটায় ক্রেতাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সঠিক ও স্বাস্থ্যসম্মত গরু নির্বাচন। তবে অসাধু কিছু বিক্রেতা কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটাতাজা করে ওজন বৃদ্ধি করে ক্রেতাদের ধোঁকা দিতে পারেন। কৃত্রিমভাবে মোটা করা গরু চেনার কিছু কার্যকর উপায় জানা থাকলে সহজেই সঠিক পশু নির্বাচন করা সম্ভব।
প্রথমত, গরুর শরীরের গঠন দেখতে হবে। প্রকৃতির মোটাতাজা গরুর শরীরের মাসল সমানভাবে বিকশিত থাকে। কৃত্রিমভাবে মোটা করলে গরুর শরীরের কিছু অংশ যেমন পেট, পায়ের নিচে বা পেছনের অংশ ফোলাটে হলেও মাসল দৃঢ়তা ও প্রাকৃতিক গঠন কম থাকে। গরুর চোখ ও মুখের আশেপাশে স্বাভাবিক ভাব থাকলেও, কৃত্রিমভাবে মোটা হলে মুখ ও চোখে ক্লান্তি বা অস্বাভাবিক শ্লথ ভাব দেখা যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত, গরুর হাঁটু ও গোড়ালির নড়াচড়া পরীক্ষা করতে হবে। প্রকৃতির মোটা গরু হাঁটাচলার সময় শক্তিশালী ও সাবলীল হয়, কিন্তু কৃত্রিমভাবে মোটা করা গরু হাঁটতে দ্বিধাগ্রস্ত বা কম গতিশীল হতে পারে। এছাড়া, পায়ের নিচের অংশে অতিরিক্ত ফোলাভাব থাকলে সাবধান হওয়া উচিত।
তৃতীয়ত, গরুর গোটা শরীরে বা বিশেষ করে পেটের নিচে ফোস্কা বা টিউমারের উপস্থিতি খেয়াল রাখতে হবে, কারণ কৃত্রিমভাবে ওজন বাড়াতে ইনজেকশন দেওয়া হলে সেখানে ফোস্কা দেখা দিতে পারে। গরুর মুখ থেকে নাক পর্যন্ত সজীবতা ও শ্বাসপ্রশ্বাসের স্বাভাবিকতা পরীক্ষা করাও জরুরি।
চতুর্থত, বিক্রেতার কাছ থেকে গরুর জন্মস্থান, খাদ্যাভ্যাস এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য নিতে হবে। প্রকৃতির মোটাতাজা গরু সাধারণত নিয়মিত পরিচর্যা ও সুষম খাবার পায়, কিন্তু কৃত্রিমভাবে মোটা গরুতে এ ধরনের তথ্য পাওয়া কঠিন হয় বা বিক্রেতা অস্পষ্টতা প্রকাশ করতে পারে।
শেষে, বিশ্বাসযোগ্য পশু বিক্রেতার কাছ থেকে গরু কেনাই নিরাপদ। প্রয়োজনে পশু বিশেষজ্ঞ বা অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাহায্য নিয়ে পশুর স্বাস্থ্য ও ওজন যাচাই করা উচিত। এইসব সতর্কতা মেনে চললে ঈদে সঠিক ও স্বাস্থ্যসম্মত কোরবানির গরু কেনা সম্ভব হবে এবং অপ্রয়োজনীয় অর্থ ও সময়ের ক্ষতি রোধ হবে।
thebgbd.com/NA
