ঢাকা | বঙ্গাব্দ

১২ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা

ট্রাম্প তার ঘোষণাপত্রে বলেন, ‘আমার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্র এবং এর জনগণের জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষা করা।’
  • অনলাইন ডেস্ক | ০৫ জুন, ২০২৫
১২ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার গভীর রাতে তার প্রথম মেয়াদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আবারও কার্যকর করেছেন। নতুন ঘোষণাপত্র অনুযায়ী, আফগানিস্তান, ইরান, লিবিয়া ও সোমালিয়াসহ মোট ১২টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা অন্য দেশগুলো হলো বার্মা (মিয়ানমার), শাদ, কঙ্গো, ইরিত্রিয়া, হাইতি, সুদান, ইয়েমেন ও ইকুয়েটোরিয়াল গিনি।


এই সিদ্ধান্তের সমালোচকরা একে বৈষম্যমূলক নীতি হিসেবে আখ্যায়িত করলেও ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি—এটি জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে নেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা সোমবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কার্যকর হবে। একইসঙ্গে বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা থেকে আগতদের ওপর বাড়তি সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হবে।


ট্রাম্প তার ঘোষণাপত্রে বলেন, ‘আমার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্র এবং এর জনগণের জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষা করা।’ এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে রয়েছে ২০ জানুয়ারি জারি করা একটি নির্বাহী আদেশ। এতে ট্রাম্প পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগ এবং জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের কাছে ‘যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাব’ পোষণকারী দেশগুলোর তালিকা ও সেসব দেশ থেকে আগতদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করে কি না—সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন চান।


ট্রাম্প ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তার প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন—ইরাক, সিরিয়া, ইরান, সুদান, লিবিয়া, সোমালিয়া ও ইয়েমেন। এই নিষেধাজ্ঞা তার প্রেসিডেন্সির অন্যতম সবচেয়ে বিতর্কিত ও বিশৃঙ্খল সিদ্ধান্তে পরিণত হয়। ওই দেশগুলোর বহু শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, পর্যটক এবং আত্মীয়স্বজন দেখতে আসা মানুষ বিমানবন্দরে আটক হন কিংবা যুক্তরাষ্ট্রগামী ফ্লাইটে উঠতেই দেওয়া হয়নি।


এই নির্বাহী আদেশকে তখন ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ বা ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। বহু আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এটি পরবর্তী সময়ে নতুন রূপে সাজানো হয় এবং ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট তা অনুমোদন করে। এই নিষেধাজ্ঞা ইরান, সোমালিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়া ও লিবিয়া থেকে আসা বিভিন্ন শ্রেণির যাত্রী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ওপর প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি উত্তর কোরিয়ার নাগরিক ও ভেনেজুয়েলার কিছু সরকারি কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও এটি প্রযোজ্য ছিল।


ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা এই নিষেধাজ্ঞাকে জাতীয় নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক বলে দাবি করেন, এবং বলেন এটি মুসলিমবিদ্বেষী মনোভাবের ফল নয়। তবে ট্রাম্প তার ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারে মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সরাসরি নিষেধাজ্ঞার ডাক দেন।


সূত্র: এএফপি 


এসজেড