পরিবেশ দূষণ ও স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার দায়ে যুক্তরাজ্যের ছয়টি প্রধান পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের বোনাস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, দূষণ মোকাবেলায় ব্যর্থ এমন কোম্পানির নির্বাহীদের পুরস্কৃত করা মোটেই উপযুক্ত নয়। লন্ডন এএফপি থেকে এ খবর জানিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেমস ওয়াটার। প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে আর্থিক সংকটে রয়েছে। এছাড়া ইয়র্কশায়ার ওয়াটার, অ্যাংলিয়ান ওয়াটার, ওয়েসেক্স ওয়াটার, ইউনাইটেড ইউটিলিটিজ এবং সাদার্ন ওয়াটারের ওপরও বোনাস নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সরকারি ঘোষণা বলা হয়েছে, ‘যেসব পানি সরবরাহ কোম্পানির পরিবেশগত ও গ্রাহকসেবার মান খারাপ, তাদের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বোনাস দেওয়া যাবে না।’
১৯৮৯ সালে বেসরকারিকরণের পর থেকে যুক্তরাজ্যের পানি সরবরাহ খাতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ হয়নি। বেশিরভাগ স্যুয়ারেজ নেটওয়ার্ক এখনো ভিক্টোরিয়ান যুগের। এ কারণে নদ-নদী ও সমুদ্রে ব্যাপক হারে অপচনশীল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ফেলার ঘটনা ঘটছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে পানি কোম্পানিগুলো নির্বাহী ও কর্মকর্তাদের প্রায় ১১২ মিলিয়ন পাউন্ড (১৫২ মিলিয়ন ডলার) বোনাস ও প্রণোদনা দিয়েছে। অথচ পানি দূষণরোধে তারা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
পরিবেশমন্ত্রী স্টিভ রিড বলেন, কর্মকর্তারা কেবল তখনই বোনাস পাবেন, যখন ভালো কাজ করবেন। পানিদূষণ রোধে ব্যর্থ হলে পাবেন না। জুলাইয়ে ক্ষমতায় আসা লেবার সরকার পানি সেক্টরকে ‘সংকটে পড়া’ খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই খাতের সংস্কার এবং আইন অমান্যকারী কর্তাব্যক্তিদের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান চালুর অঙ্গীকার করেছে।
সম্প্রতি পানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফওয়াট লন্ডনের ১.৬ কোটি গ্রাহক সংখ্যার সরবরাহকারী ‘থেমস ওয়াটার’ কে ১২৩ মিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা করে। এটি ছিল প্রতিষ্ঠানটির জন্য রেকর্ড জরিমানার ঘটনা। এর মধ্যে ১৮.২ মিলিয়ন পাউন্ড ছিল ‘অযৌক্তিকভাবে’ দেওয়া ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত।
বর্তমানে থেমস ওয়াটার রাষ্ট্রীয় অর্থায়নের বিকল্প হিসেবে বেসরকারি ক্রেতার খোঁজ করছে। তবে মার্কিন বিনিয়োগ সংস্থা কেকেআর মঙ্গলবার সম্ভাব্য একটি চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। ব্রিটেনের জাতীয় বাজেট পর্যবেক্ষণ সংস্থা পাবলিক স্পেন্ডিং ওয়াচডগ গত এপ্রিল মাসে সতর্ক করে জানায়, আগামী ২৫ বছরে পানি খাতে ২৯০ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে পরিবেশ ও সরবরাহ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়।
সূত্র: এএফপি
এসজেড
