ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ড. ইউনূসের ওপর মার্কিন সমর্থন কচুপাতার পানির মতো টলটল করছে : রনি

সাবেক সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ ও কলাম লেখক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে যদি মার্কিন সরকারের সম্পর্ক থাকে এবং তার ভিত্তিতে যদি সরকার পরিচালিত হতে থাকে; তাহলে সে সম্পর্কটা অবশ্যই অবশ্যই কচুপাতার পানির মতো টলমল করছে।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৭ জুন, ২০২৫
ড. ইউনূসের ওপর মার্কিন সমর্থন কচুপাতার পানির মতো টলটল করছে : রনি ছবি : সংগৃহীত।

সাবেক সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ ও কলাম লেখক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে যদি মার্কিন সরকারের সম্পর্ক থাকে এবং তার ভিত্তিতে যদি সরকার পরিচালিত হতে থাকে; তাহলে সে সম্পর্কটা অবশ্যই অবশ্যই কচুপাতার পানির মতো টলমল করছে।

রনি বলেন, ‘সবাই জানি যে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আমেরিকার সঙ্গে ড. ইউনূসের একটা ভালো সম্পর্ক রয়েছে। যেটাকে আমেরিকান লবিস্ট বলা হয়। সেই আমেরিকান লবিস্ট গ্রুপ যখন তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশে তাদের পছন্দের মানুষকে রিক্রুট করতে চান, সেই রিক্রুটমেন্টের কতগুলো প্রসিডিউর রয়েছে।

তারা যেভাবে ইরানের রেজা শাহকে নিযুক্ত করেছিলেন, তারা যেভাবে সাদ্দাম হোসেনকে তৈরি করেছিলেন, তারা যেভাবে হামিদ কারজাইকে তৈরি করেছিলেন, এ রকম বহু ঘটনা রয়েছে।’

‘পরবর্তী সময়ে আবার দেখা গেল যে সময়ের বিবর্তনে এই মানুষগুলো মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করতে না পারার কারণে তাদের যুক্তরাষ্ট্র ক্ষেত্রবিশেষে যুদ্ধ করে হলেও শেষ করে দিয়েছে। তো সেই দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০ বছর, ৩০ বছর, ৪০ বছর বিনিয়োগ করে যখন কাউকে তৈরি করে তাদের ক্ষমতায় বসায়; তারা ওই ২০ বছরের যে রেজাল্ট, সেটা ২০ দিনে পেতে চায় এবং ২০ দিনের মধ্যে যদি তারা দিতে না পারে তাহলে তারা তাকে শেষ করে দেবে। এটা হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে ডিপ স্টেট পলিসি সে পলিসির একটা মূলধারা।’

‘তো বাংলাদেশের এই যে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পেছনে ডিপ স্টেটের ভূমিকা এবং এই বিপ্লবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ অন্যান্য সরঞ্জামাদি রয়েছে, কীভাবে বিভিন্ন সরঞ্জামাদি এ দেশে এসেছে এবং কিভাবে এই ট্রেনিংগুলো হয়েছে এবং সেগুলো কতটা ধ্বংসাত্মক ছিল এবং কত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; এগুলো এখন বলতে গেলে ওপেন সিক্রেট। তো সেই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের যে ফসল, সেই ফসল হিসেবে আমরা যাদের পেয়েছি তারা ছিলেন আমাদের চোখের মনি মাথার মুকুট।’

‘কিন্তু এখন তাদের সব কিছুর সঙ্গে আমাদের বিক্রিয়া হচ্ছে। এক ধরনের বিকর্ষণ তৈরি হয়ে গেছে। তাদের অনেক কিছু আমরা এখন আর সহ্য করতে পারছি না। দেখলে আমাদের মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে। সীমাহীন চাঁদাবাজি, অনিয়ম, রাজনৈতিক স্থবিরতা এবং অর্থনৈতিক ধস সুনামির মতো চারদিক থেকে বাংলাদেশকে একটা ঘূর্ণিপাকের মধ্যে ফেলেছে। সেই ঘূর্ণিপাকের মধ্যে পড়ে আমরা নিজেদের খেই হারিয়ে ফেলেছি।’

গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘দৃশ্যত আমরা যেটা দেখতে পাই বা দৃশ্যত যেটা বোঝা যায়, সেটা হলো—আমেরিকার সঙ্গে ড. ইউনূসের একটা সম্পর্ক আছে। এখন এই সম্পর্কটা কতদিন থাকবে? কারণ, ড. ইউনূস এবং তার সরকার আমেরিকার জন্য এখন পর্যন্ত এ রকম কোনো স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারেননি। এর ফলে তার প্রতি আমেরিকার যে সমর্থন বা তার সঙ্গে যে আমেরিকার লবিস্ট গ্রুপগুলো ছিল এগুলো কাঁপছে।’

‘বর্তমানে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, যে কচুগাছের পাতার ওপরে যখন দুই-চার ফোঁটা পানি থাকে, সেই পানিগুলো সামান্য বাতাসে যেভাবে অস্থিরভাবে কাঁপতে থাকে; তদ্রূপ আমেরিকার সঙ্গে কারোরই সম্পর্ক পারমানেন্ট থাকে না। গত ৫০ বছর ধরে কৌশলগত বন্ধুত্ব রয়েছে, মিত্রতা রয়েছে। এ রকম দেশ বলতে শুধু ইংল্যান্ড রয়েছে। এর বাইরে আমেরিকার সঙ্গে যাদেরই বন্ধুত্ব হয়েছে, বহুবার তাদের মধ্যে টানাপড়েন হয়েছে। অনেক বন্ধু রীতিমতো শত্রুতে পরিণত হয়েছে। আমেরিকা যেকোনো মানুষের বিরুদ্ধে চোখ উল্টাতে এক মিনিট সময় লাগে না। আশা করি আপনারা সবাই বুঝতে পারছেন।’

thebgbd.com/NA