ঢাকা | বঙ্গাব্দ

যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘না’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কানাডিয়ান কর্মকর্তা বলেন, ‘মার্কিনিরা পরিস্থিতিকে হালকা করে তুলতে চাইছে।’
  • অনলাইন ডেস্ক | ১৮ জুন, ২০২৫
যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘না’ জি৭ সম্মেললে নেতারা।

ইউক্রেন সমর্থনে জি-৭ নেতাদের যৌথ বিবৃতি নাকচ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শীর্ষ সম্মেলন ছেড়ে যাওয়ার পর গ্রুপ অব সেভেন নেতারা মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রতি আরো বেশি সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন। রাশিয়া তার প্রতিবেশীর ওপর আক্রমণ তীব্রতর করায় তার ওপর চাপ প্রয়োগ করে জি-৭ নেতারা এক বিবৃতিতে উপনীত হয় তবে, যুক্তরাষ্ট্র তা নাকচ করে দিয়েছে। কানানাস্কিস থেকে এএফপি এ খবর জানায়। 


জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও  ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে সাক্ষাৎ হওয়ার কথা কথা ছিল। ট্রাম্পের সঙ্গে তার অস্থির সম্পর্ক বিদ্যমান। কিন্তু দুই নেতার সাক্ষাতের আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেশে ফিরে গেছেন। ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের কারণে সোমবার তাকে দেশে ফিরতে হয়।


রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে কিয়েভে আক্রমণের পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহতম বোমাবর্ষণের কয়েক ঘন্টা পরে, জেলেনস্কি রকি পর্বতমালার অংশ কানাডিয়ান রকিজ’র একটি প্রত্যন্ত লজে বাকি নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জেলেনস্কিকে স্বাগত জানান এবং ইউক্রেনের জন্য ড্রোন ও হেলিকপ্টারসহ ২ বিলিয়ন কানাডীয় ডলার (১.৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) সামরিক সহায়তা ঘোষণা করেন।


কিন্তু জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করতে পারেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কানাডিয়ান কর্মকর্তা বলেন, ‘মার্কিনিরা পরিস্থিতিকে হালকা করে তুলতে চাইছে।’ কর্মকর্তা বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছু ভাষার আপত্তি জানিয়ে বলেছে, তারা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তাদের ভূমিকা বজায় রাখতে চায়।’


কার্নি দ্বন্দ্বের পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, সমস্ত জি-৭ নেতারা ‘রাশিয়ার ওপর সর্বাধিক চাপ প্রয়োগের জন্য সকল বিকল্প অন্বেষণে দৃঢ়’ হতে সম্মত হয়েছেন, যার মধ্যে আর্থিক নিষেধাজ্ঞাও অন্তর্ভুক্ত। জি-৭ নেতারা সোমবার ইরান সংঘাতের ওপর একটি যৌথ বিবৃতিতে সম্মত হন যা ইসরায়েলকে সমর্থন করে, তবে এতে ব্যাপকভাবে উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানানো হয়।


কার্নি এর আগে রাশিয়ার তথাকথিত ছায়া জাহাজের বহরের ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোর করার ক্ষেত্রে ব্রিটেনের সঙ্গে যোগ দেন, যা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ব্যবহৃত হত। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এক বিবৃতিতে বলেন ‘এই নিষেধাজ্ঞাগুলো পুতিনের যুদ্ধযন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে আঘাত করে।’


আবেগাপ্লুত হয়ে জেলেনস্কি কার্নিকে বলেন, রাশিয়ার সর্বশেষ আক্রমণ একটি ‘বড় ট্র্যাজেডি’। মিত্রদের সমর্থনের প্রয়োজনীয়তা দেখিয়ে বলেন, তিনি এখনও ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন আলোচনার আহ্বানকে সমর্থন করেন। জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের সেনাদের যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তিশালী থাকা গুরুত্বপূর্ণ, যতক্ষণ না রাশিয়া শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের শক্তিশালী থাকা উচিত। নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যেআমরা শান্তি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। এর জন্য আমাদের চাপ প্রয়োজন।’


ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর বিশ্বব্যাপী মনোযোগকে কাজে লাগিয়ে ইউক্রেনের ওপর মারাত্মক হামলা চালানোর অভিযোগ করেছেন। ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্র দপ্তরও রাশিয়ার হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।


সূত: এএফপি


এসজেড