ঢাকা | বঙ্গাব্দ

টাকা লুট করতে ক্ষমতায় বসিনি: ধর্ম উপদেষ্টা

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা লুট করার জন্য আমরা ক্ষমতায় বসিনি বলে দাবি করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, মসজিদের মাধ্যমে আমরা নৈতিকতা, মূল্যবোধ, সুন্নত ছড়িয়ে দিতে চাই। বেদাত থেকে সমাজকে রক্ষা করতে চাই। যত বেশি মসজিদ হবে মানুষ ততবেশি নামাজি হবে, নামাজির সংখ্যা বাড়বে।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৪ জুলাই, ২০২৫
টাকা লুট করতে ক্ষমতায় বসিনি: ধর্ম উপদেষ্টা ছবি : সংগৃহীত।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা লুট করার জন্য আমরা ক্ষমতায় বসিনি বলে দাবি করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, মসজিদের মাধ্যমে আমরা নৈতিকতা, মূল্যবোধ, সুন্নত ছড়িয়ে দিতে চাই। বেদাত থেকে সমাজকে রক্ষা করতে চাই। যত বেশি মসজিদ হবে মানুষ ততবেশি নামাজি হবে, নামাজির সংখ্যা বাড়বে।


আজ শুক্রবার (৪ জুলাই) চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় একটি মডেল মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও দুইটি মসজিদ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।


ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সরকার ১৩ কোটি টাকা খরচ করে এ মসজিদ নির্মাণ করে দিয়েছে। এখন মসজিদকে আবাদ রাখার দায়িত্ব এলাকাবাসীর। মসজিদভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করে সমাজের সবাইকে নিয়মিত মসজিদমুখী হতে হবে। মসজিদকে সচল রাখতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে আদায় করতে হবে। 


তিনি আরও বলেন, কেননা নামাজ সব ধরনের খারাপ কাজ থেকে মুক্ত রেখে মানুষের মধ্যে নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করে, মূল্যবোধ সমুন্নত রাখে। সমাজের প্রতিটি সদস্য যদি ধর্মচর্চা ও অনুশীলনে মনোযোগী হয় তাহলে অপরাধপ্রবণতা কমবে। ধর্মীয় মূল্যবোধ মানব চরিত্রকে উৎকর্ষের পূর্ণতায় অভিষিক্ত করে।


উপদেষ্টা বলেছেন, সরকারের সঠিক পদক্ষেপের কারণে চলতি বছর হজ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দেশের বিমানবন্দরে কোনো হাজি যেমন হয়রানির সম্মুখীন হননি, তেমনি সৌদি আরবে গিয়েও কেউ বিড়ম্বনার শিকার হননি। কেউ হারিয়ে যাননি। এ ছাড়া এবার স্বল্পমূল্যে কাবার কাছাকাছি স্থানে হাজিদের জন্য ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছে। ফলে আমাদের খরচ কিছুটা কম হয়েছে এবং কিছু টাকা জমা রয়েছে। সব হাজি দেশে আসা শেষ হলে জমা টাকা ফেরত দেওয়া হবে। টাকা মেরে খাওয়ার জন্য আমরা ক্ষমতায় বসিনি।

 

এ সময় উপদেষ্টা রাউজানের মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন ও মসজিদে জুমার বয়ান করেন।


আয়োজনটিতে উপস্থিত ছিলেন- হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম মশিউজ্জামান, হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ, মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু কাওসার মাহমুদ হোসেন, প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, গণপূর্ত অধিদপ্তর) মো. শহিদুল আলম, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কেন্দ্রের জমি নির্বাচন সংক্রান্ত কমিটির দুই সদস্য ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আউয়াল হাওলাদার ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) আ. ছালাম খান এবং উপ-প্রকল্প পরিচালক (প্রকৌশল) মোহাম্মদ ফেরদৌস-উজ-জামান, দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার পরিচালক মুফতি খলিল আহমেদ কাসেমী।


ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ফলক উদ্বোধন শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস মাওলানা শেখ আহমদ।


জানা গেছে, প্রায় ১১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জেলা গণপূর্ত বিভাগ। তিনতলা বিশিষ্ট এই মডেল মসজিদে পুরুষ মুসল্লী ছাড়াও মহিলাদের নামাজের সুব্যবস্থা, ইসলামিক লাইব্রেরি, ইমাম ট্রেনিং সেন্টার, ১০তলা উঁচু মিনার, সম্মেলন কক্ষ, হিফজখানা/মক্তব, ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফিস, লাশ ধোয়ার ব্যবস্থা, প্রতিবন্ধীদের নামাজের ব্যবস্থা, বিশাল শাহান, সুবিশাল গাড়ি পার্কিং, ইসলামি বই বিক্রির স্যুভেনির শপ, অতিথিশালা, ইমাম-মুয়াজ্জিম ও খাদেমদের থাকার কক্ষ, ইসলামি গবেষণা কেন্দ্রসহ নানা ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে ইসলামি সংস্কৃতি বিকাশে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।


এ তিনটি মসজিদ নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে সারাদেশে ৫৬৪টি মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে। এ মসজিদগুলো সে প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে।


thebgbd.com/NA