হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এরপরই শোক জানিয়েছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।
তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে তিনি ‘গভীরভাবে শোকাহত’। সোমবার (২০ মে) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে ইরান এবং দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। তিনি বলেছেন, রাইসি ভেনিজুয়েলার ‘নিঃশর্ত বন্ধু’ ছিলেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে মাদুরো লিখেছেন, ‘বলিভারিয়ান রিপাবলিক অব ভেনিজুয়েলার পক্ষ থেকে (আপনাকে) আন্তরিক আলিঙ্গন। আপনি ও ইরান মর্যাদা, নৈতিকতা এবং প্রতিরোধের উদাহরণ।’
এদিকে একই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানও। তার মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন ইরানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ।
আল জাজিরা বলছে, ইরানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ দেশটির প্রেসিডেন্ট রাইসির সঙ্গে তার উত্তরসূরি হোসেন আমির-আবদুল্লাহিয়ানের নিহত হওয়ার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।
এমনকি আমির-আবদুল্লাহিয়ানকে ‘আমার প্রিয় ভাই’ বলে উল্লেখ করেন জারিফ। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক বার্তায় জারিফ লিখেছেন, দুর্ঘটনার এই খবরটি ‘বেদনাদায়ক’।
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি শহীদদের জন্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি, যারা বেঁচে গেছেন তাদের জন্য শান্তি ও ধৈর্য এবং ইরানের জনগণের জন্য সংহতি ও অগ্রগতি কামনা করছি।’
এর আগে রোববার উত্তর-পশ্চিম ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এবং আরও কয়েকজন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি জানায়। তবে এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো নিশ্চিতকরণ পাওয়া যায়নি।
এর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ার বেশ লম্বা সময় পর অবশেষে উদ্ধারকারীরা রাইসির হেলিকপ্টার খুঁজে পান। তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরআইএনএন এবং আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজ জানিয়েছিল, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির দুর্ঘটনাস্থলে ‘কোনও জীবিত ব্যক্তি’ পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, রোববার একটি বাঁধ উদ্বোধন করে ইরানি প্রদেশ পূর্ব আজারবাইজানের তারবিজে যাচ্ছিলেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এই সময় তার সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন। তারবিজে ফেরার পথেই হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাইসি আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে কিজ কালাসি এবং খোদাফারিন বাঁধ দুটি উদ্বোধন করেন। সেখান থেকে ফিরে তিনি ইরানের উত্তর-পশ্চিমে তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন।
ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘটনাটি পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের ভারজাকান এবং জোলফা শহরের মধ্যে অবস্থিত ডিজমার জঙ্গলে ঘটেছে বলে জানিয়েছে প্রেস টিভি।