রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসপিয়া সুলতানা। আজ সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান কলেজ ভবনে আছড়ে পড়ার ভয়াবহ দৃশ্য চোখের সামনে দেখতে হয়েছে তাকে—যে দৃশ্যের ধাক্কায় বারবার অচেতন হয়ে পড়ছে তাসপিয়া।
এই ঘটনার মাত্র এক বছর আগে, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে পুলিশের গুলিতে নিজ বাড়ির বারান্দায় নিহত হয়েছিল তাসপিয়ার ছোট বোন, দশম শ্রেণির ছাত্রী নাঈমা সুলতানা। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয় নাঈমা। তার মৃত্যুর ক্ষত এখনো ভুলতে পারেননি মা আইনুন নাহার ও বোন তাসপিয়া।
আজকের দুর্ঘটনায়ও এক চুলের জন্য রক্ষা পেয়েছে তাসপিয়া। উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে কলেজ শেষে ক্লাস থেকে বের হয়ে ঝালমুড়ি কিনতে গিয়েছিল সে। তা না হলে হয়তো আজও আরেকটি ট্র্যাজেডি লিখে যেত তাদের পরিবারে।
তাসপিয়ার মা আইনুন নাহার জানান, দুর্ঘটনার পর মেয়েকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে বাসায় এনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মেয়ে বারবার কাঁদছে এবং বলছে, "ওদের (শিক্ষার্থীদের) কী হবে!"
আইনুন নাহার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, “জুলাই এত অভিশপ্ত কেন। সবাই আমার বড় মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।”
ছোট ভাই আব্দুর রহমান মাইলস্টোন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরের শাখায় পড়ে, তবে দুর্ঘটনা ঘটেছে মূল ক্যাম্পাসে—উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে।
নাঈমার বাবা গোলাম মোস্তফা চাঁদপুরে হোমিও চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। মেয়ে তাসপিয়ার খবর শুনে তিনি ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন।
এদিকে আজকের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাইলটসহ ১৯ জন নিহত এবং অন্তত ১৬৪ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। মর্মান্তিক এ ঘটনার পর উত্তরার আকাশজুড়ে শোক আর আতঙ্ক।
thebgbd.com/NA