ঢাকা | বঙ্গাব্দ

‘আমার মেয়ে বলল, মা, সব জ্বলে’

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখনো শোক থামেনি।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ জুলাই, ২০২৫
‘আমার মেয়ে বলল, মা, সব জ্বলে’ ছবি : সংগৃহীত।

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখনো শোক থামেনি। সেই মর্মন্তুদ ঘটনার পর, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট যেন এখন শিশুদের আহাজারিতে ভারী।

৫২০ নম্বর কক্ষের মেঝেতে বসে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন ইয়াসমিন আক্তার। তাঁর ১১ বছর বয়সী মেয়ে, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুরে জান্নাত ইউশা, দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে।

ভাঙা কণ্ঠে ইয়াসমিন বলেন, “আমার মেয়ের কপাল পুড়ে গেছে, মুখ ঝলসে গেছে, মাথা ফেটে গেছে, পিঠও পুড়ে গেছে। কিন্তু তারপরও আমার মেয়ে আমাকে বলেছে—‘মা, আমার সব জ্বলে।’”

তিনি জানান, তাঁর দুই সন্তানের মধ্যে ইউশা বড়, মাইলস্টোন স্কুলেই পড়ত।

একই ওয়ার্ডের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আরেক মা, নাসিমা বেগম। তাঁর ছেলে রবিউল হাসান রোহান সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী। তিনিও বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন।

নাসিমা বারবার বিলাপ করে বলছিলেন, “আমার রোহান যন্ত্রণায় কাতরাইতাছে রে। এমন দশা ক্যামনে হইছে রে! কত মায়ের বুক খালি হইছে রে।”

রোহানের বাবা মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, “আমার ছেলের পুরো শরীর পুড়ে গেছে। কী বলব, কী করব—ভেবেই পাই না।”

দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বিমানটি উড্ডয়ন করার পরপরই বিধ্বস্ত হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ২৮ জন ভর্তি হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। এখন পর্যন্ত অন্তত দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে।

উত্তরার আকাশে আগুনের হলকা আর ধোঁয়া উড়ে গেছে, কিন্তু হাসপাতালে জমে আছে পুড়ে যাওয়া শিশুরা, আর বিধ্বস্ত মা-বাবার চোখের অশ্রু।

thebgbd.com/NA