ঢাকা | বঙ্গাব্দ

গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারকে জানানোর বাধ্যবাধকতা রেখে ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের খসড়া অনুমোদন

গ্রেপ্তারের পর সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবার, বন্ধু বা আইনজীবীকে অবহিত করার বাধ্যবাধকতা রেখে ‘ফৌজদারি কার্যবিধি (দ্বিতীয় সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ জুলাই, ২০২৫
গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারকে জানানোর বাধ্যবাধকতা রেখে ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের খসড়া অনুমোদন ছবি : সংগৃহীত।

গ্রেপ্তারের পর সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবার, বন্ধু বা আইনজীবীকে অবহিত করার বাধ্যবাধকতা রেখে ‘ফৌজদারি কার্যবিধি (দ্বিতীয় সংশোধনী) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নতুন বিধান কার্যকর হলে কাউকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়ার সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবার, বন্ধু বা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানাতে হবে কেন, কোন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং সে কোথায় রয়েছে। এই সময়সীমা কোনো অবস্থাতেই অতিক্রম করা যাবে না। গ্রেপ্তারকারী পুলিশ সদস্যের যথাযথ পরিচয় থাকতে হবে—নেমপ্লেট ও আইডি কার্ডসহ। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি চাইলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি দেখাতে হবে। গ্রেপ্তারের সময় কিংবা পরবর্তীকালে যদি ওই ব্যক্তি অসুস্থ বোধ করেন বা শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে হবে।

সংশোধনী অনুযায়ী, প্রতিটি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে বিস্তারিত লিখিত তথ্য রাখতে হবে—গ্রেপ্তারকারী কর্মকর্তা, অভিযোগের ধরণ, প্রয়োগকৃত আইন, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্যসহ সবকিছু সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সংরক্ষণ করতে হবে। এসব তথ্য নিয়মিতভাবে পুলিশ সদর দপ্তর, জেলা পুলিশের কার্যালয় এবং থানায় হালনাগাদ রাখতে হবে।

৫৪ ধারার বিষয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এখন থেকে যদি সন্দেহের ভিত্তিতে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নিশ্চিত হতে হবে যে তার সামনে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং যথেষ্ট বিশ্বাসের কারণ রয়েছে যে ওই ব্যক্তি অপরাধে জড়িত। একই সঙ্গে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে হবে কেন এমন সন্দেহ হলো এবং প্রমাণ করতে হবে যে গ্রেপ্তার না করলে ব্যক্তি পালিয়ে যেতে পারে। এই দুই শর্ত পূরণ না হলে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার বৈধ হবে না।

এ ছাড়া অনলাইনে বেইল বন্ড দাখিল এবং ডিজিটাল সমন জারির ব্যবস্থাও সংশোধনীতে রাখা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, সঠিকভাবে প্রতিপালন করা গেলে এই সংশোধনী ইচ্ছেমতো গ্রেপ্তার, অস্বীকার বা গুমের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

thebgbd.com/NA