ঢাকা | বঙ্গাব্দ

তাবলিগের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে কমিটি হচ্ছে: ধর্ম উপদেষ্টা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩০ জুলাই, ২০২৫
তাবলিগের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে কমিটি হচ্ছে: ধর্ম উপদেষ্টা উপদেষ্টা আ ফম খালিদ হোসেন।

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিবাদ মেটাতে ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফম খালিদ হোসেন।

আজ বুধবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তাবলিগের দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।

তাবলিগের বিবাদ নিরসনে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে এ কমিটি হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, 'কমিটিতে দুই পক্ষ তাদের প্রতিনিধি থাকবেন। আশা করি এই কমিটির মাধ্যমে উভয় গ্রুপ একটি সমঝোতায় উপনীত হতে পারবে। সামনে সংঘাতের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা এটাই চাচ্ছি’।

তিনি বলেন, ‘তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপ অনেকদিন ধরে আমাদের সঙ্গে বৈঠক করতে চাচ্ছিলেন আমরা সময় দিতে পারছিলাম না। আজকে তাদের সঙ্গে বৈঠকের দিন নির্ধারিত ছিল। যদিও সময় আলাদা আলাদা ছিল। কিন্তু আমরা একসঙ্গে বৈঠক করেছি। বৈঠকে দুই গ্রুপের সম্মানিত মুরুব্বিরা ছিলেন।’

‘কিছু সমস্যা দুই গ্রুপের মধ্যে আছে সেগুলোকে সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আমরা কথা বলেছি। আগামী দিনে তাদের সঙ্গে আরও বৈঠক করবো। একটু কাছাকাছি নিয়ে আসা। আপনারা জানেন গত বছর একটা হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতি যাতে আগামী দিনে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, এ ব্যাপারে উভয়পক্ষের সহযোগিতা চেয়েছি।’

খালিদ হোসেন বলেন, ‘২০২৪ সালে আমরা যখন বারবার বৈঠক করেছি, উভয় গ্রুপ একসঙ্গে বসতে সম্মত ছিলেন না। এটাই প্রথম উভয় গ্রুপ দুজন উপদেষ্টার সঙ্গে বসে আলাপ-আলোচনা করার সুযোগ করে দিল।’

দুই গ্রুপ একসঙ্গে ইজতেমা করবেন কি না- এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অতদূর পর্যন্ত এখনো পৌঁছেনি। এগুলো আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষে হবে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আগামীতে নির্বাচনের একটা প্রস্তুতি চলছে সরকারের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যস্ততা বেশি। আমার মন্ত্রণালয়ের অনেক কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। আমরা একটু গুছিয়ে নিতে চাই। আমাদের সময় স্বল্পতা রয়েছে এটা নিয়ে সময় দিতে পারছি না। আমরা যদি একটা কমিটি গঠন করে দেই তাহলে ওনারা দুই গ্রুপ কমিটির সঙ্গে বসবেন। দুই গ্রুপ যদি একটি সমঝোতায় আসতে পারেন বা ঐক্যমতে উপনীত হন, তাহলে আমাদের কাছে রেফার করলে আমরা সেটা ফাইনালি দেখব, অনুমোদন দেব।’

তিনি বলেন, ‘ইজতেমা একসঙ্গে করা, কাকরাইল মসজিদ- এসব বিষয় নিয়ে কমিটির আলোচনা করে যে ফলাফল বেরিয়ে আসবে সেটাই আমরা বিবেচনা করব।’

বৈঠকে মাওলানা সাদ কান্ধলভীপন্থি মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম ও জুবায়েরপন্থি মাওলানা মামুনুল হকসহ অন্য মুরব্বিরাও উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের তাবলিগ জামাতের দুটি পক্ষ রয়েছে। একপক্ষে রয়েছেন দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের বর্তমান মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভীপন্থিরা। এই পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কাকরাইল মসজিদের আহলে শূরা মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম। আরেক পক্ষে রয়েছেন মাওলানা সাদবিরোধী মাওলানা জুবায়ের আহমেদপন্থিরা (শুরায়ে নেজাম)।

মাওলানা সাদ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় কোরআন, হাদিস, ইসলাম, নবি-রাসুল ও নবুয়ত এবং মাসআলা-মাসায়েল নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন- মাওলানা জুবায়ের ও তার অনুসারীরা।

গতবছর টঙ্গী ইজতেমা মাঠে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে।


thebgbd.com/NIT