ঢাকা | বঙ্গাব্দ

নিউইয়র্কে পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুলের জানাজায় মানুষের ঢল, মরণোত্তর পদোন্নতি

নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টারে গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) নিহত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামকে শেষ বিদায় জানাতে হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ০১ আগস্ট, ২০২৫
নিউইয়র্কে পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুলের জানাজায় মানুষের ঢল, মরণোত্তর পদোন্নতি ছবি : সংগৃহীত।

নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টারে গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) নিহত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামকে শেষ বিদায় জানাতে হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। বৃষ্টিভেজা বিকেলে, ‘ট্যাপস’ বাদ্যের করুণ সুরের মধ্যে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের (NYPD) ছয়জন সদস্য কাঁধে করে বহন করেন তার কফিন। কফিনটি ঢাকা ছিল এনওয়াইপিডির সবুজ, নীল ও সাদা রঙের পতাকায়।


পার্কচেস্টার জামে মসজিদে জানাজা শেষে যখন মরদেহ বের করা হয়, তখন সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্য, স্বজন, কমিউনিটির মানুষ ও শহরের নেতারা নীরবে জানাচ্ছিলেন শ্রদ্ধা।


৩৬ বছর বয়সী দিদারুল ইসলাম গত সোমবার (২৮ জুলাই) ম্যানহাটনের এক ভবনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন। তিনি ভবনটিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।


জানাজায় উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক পুলিশের কমিশনার জেসিকা টিশ। তিনি দিদারুলের স্ত্রীকে আলিঙ্গন করে মরণোত্তর ‘ডিটেকটিভ ফার্স্ট গ্রেড’ পদে পদোন্নতির ঘোষণা দেন। কমিশনার বলেন, “তার জীবনের প্রতিটি কাজ ছিল শহর, পরিবার ও বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য।”


দিদারুল ২০১৯ সালে NYPD-তে স্কুল সেফটি এজেন্ট হিসেবে যোগ দেন এবং ২০২১ সালে হন পূর্ণাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি ছিলেন দুই সন্তানের বাবা এবং তৃতীয় সন্তানের আগমনের অপেক্ষায় ছিলেন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী।


NYPD-এর ডেপুটি ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ আশরাফ বলেন, “দিদারুল ছিলেন শুধু একজন পুলিশ কর্মকর্তা নন, ছিলেন এক অভিবাসী, এক বাবা, এক নেতা—যিনি দুই দেশের গর্ব।”


পার্কচেস্টারের কমিউনিটি নেতা ফয়সল আহমেদ বলেন, “তিনি আমাদের কমিউনিটির গর্বের প্রতীক।”

নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল তার মৃত্যুকে বলেছেন, “এক দগদগে ব্যথা।”


পরিবারের পক্ষে কথা বলেন দিদারুলের ভায়রা ও এনওয়াইপিডি সদস্য কামরুল হাসান। তিনি বলেন, “তিনি শুধু আত্মীয় ছিলেন না, ছিলেন আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ও রক্ষক।”


শেষ বিদায়ে উপস্থিত সবাই তাকে স্মরণ করেছেন একজন সৎ, নম্র ও নিবেদিতপ্রাণ পুলিশ সদস্য হিসেবে, যিনি নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন—কর্তব্য ও ভালোবাসা কোনো সীমানায় বাঁধা পড়ে না।



thebgbd.com/NA