অস্থির হয়ে উঠেছে রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজার। সপ্তাহ ব্যবধানে দাম বেড়েছে বেশিরভাগ সবজি, পেঁয়াজ, মুরগি ও মাছের দাম। ক্রেতারা দাম বৃদ্ধির অভিযোগ করলেও বিক্রেতারা বলছেন, অতিবৃষ্টির কারণে সরবরাহে ঘাটতি থাকায় বাড়ছে দাম।
বেগুন-শসার সেঞ্চুরি, মাছ-মুরগির খবর কী?
শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
টানা কমে স্বস্তির বার্তা দেয়া মূল্যস্ফীতি গত জুলাইয়ে আবার বেড়ে গেছে। জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশে। তার আঁচ রয়ে গেছে চলতি আগস্টেও। বাজারে ঊর্ধ্বমুখী বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির কারণে শাক-সবজিসহ অন্যান্য পণ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে আসতে না পারায় রাজধানীর বাজারে বেড়ে গেছে দাম। সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, মাস খানেকের বেশি সময় ধরে চলা বৃষ্টিপাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় শাক-সবজি পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। যা প্রভাব ফেলেছে সরবরাহে। ফলে বাড়ছে দাম।
বাজারে প্রতিকেজি ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, শসা ১০০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, টমোটো ১৫০ টাকা ও আলু ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৬০ টাকায়।
এদিকে বাজারে আরও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে সেটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। কোথাও প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে গুনতে হচ্ছে ৮৫ টাকাও। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরায়ও বেড়েছে দাম।
পেঁয়াজ বিক্রেতা নাসির বলেন, ‘চলতি বছর কৃষকের ঘরে মজুত থাকা অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। ফলে কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।’
বাজারে কমেছে ইলিশের দাম। বাজারে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৪০০ টাকায়। তবে কেজিতে ২০-৫০ টাকা বেড়েছে অন্যান্য মাছের দাম। প্রতিকেজি বোয়াল ৮০০-৯০০ টাকা, কোরাল ৮৫০ টাকা, আইড় ৭৫০-৮০০ টাকা, চাষের রুই ৩৮০-৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩০, কৈ ২০০-২২০ এবং পাবদা ও শিং বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়।
দাম বেড়েছে মুরগিরও। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৩০ টাকায়। এছাড়া বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়, আর প্রতি ডজন সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়।
তবে গরু ও খাসির মাংসের দামে তেমন পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায়।
ক্রেতাদের অভিযোগ, বৃষ্টির অজুহাতে দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থির করছেন ব্যবসায়ীরা। সাদ নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল। তবে এখন বৃষ্টির অজুহাত দেখিয়ে ফের বাড়ানো হচ্ছে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম। বাজার মনিটরিংয়ে সরকারকে কঠোর হওয়া দরকার।
thebgbd.com/NIT