দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ে এবার অদ্ভূত এক কৌশল ব্যবহার করেছে উত্তর কোরিয়া। মঙ্গলবার রাত থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় মানুষের মলসহ ময়লা-আবর্জনা বহনকারী প্রায় ২৬০টি ভাসমান বেলুন পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। খবর বিবিসির।
এ অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ দেশটির নাগরিকদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির ভেতরে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে।
ময়লা-আবর্জনা নিয়ে উড়ে আসা বেলুনগুলোকে যেন কেউ না স্পর্শ করে, সেই বিষয়েও সতর্কতা জারি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী। পাশাপাশি সন্দেহজনক পদার্থ থাকার আশঙ্কায় ময়লা-আবর্জনাভর্তি ব্যাগগুলো থেকে দূরে থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দেশটির ৯টি প্রদেশের ৮টিতেই ময়লাসহ উড়ে আসা বেলুন পাওয়া গেছে। এগুলোকে এখন বিশ্লেষণ করে দেখছে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা কিছু ছবিতে দেখা যায়, সাদা স্বচ্ছ বেলুনের সঙ্গে তারের মাধ্যমে সংযুক্ত ব্যাগগুলোতে টয়লেট পেপার, গাঢ় মাটি ও ব্যাটারিসহ অন্যান্য সামগ্রী রয়েছে৷
দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ নিউজ এজেন্সি জানায়, পড়ে যাওয়া কিছু বেলুন থেকে গাঢ় রঙ ও গন্ধ বের হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, মল থেকে এই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
এক সময় দক্ষিণ কোরিয়া থেকেও উত্তর কোরিয়ার দিকে পিয়ংইয়ংবিরোধী লিফলেটের পাশাপাশি চকো পাইয়ের মতো উত্তর কোরিয়ায় নিষিদ্ধ বিভিন্ন বস্তু বেলুনে করে পাঠিয়ে দিতো দক্ষিণ কোরিয়ার অ্যাকটিভিস্টরা। তবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এ ধরনের কাজকে অপরাধ আখ্যা দিয়ে আইন পাস করা হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদে।
১৯৫০-এর দশকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের সময় থেকেই উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারণার অংশ হিসেবে বেলুন ব্যবহার করে এসেছে। এ অবস্থায় নতুন বেলুনগুলোতে ময়লা–আবর্জনার সঙ্গে উত্তর কোরিয়া কোনো প্রোপাগান্ডা লিফলেট পাঠিয়েছে কি না সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সীমান্ত এলাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার অ্যাকটিভিস্টদের লিফলেট ও ময়লা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশোধ নেওয়া হবে— উত্তর কোরিয়ার এমন হুঁশিয়ারির কয়েক দিনের মধ্যেই ঘটনাটি ঘটেছে।
উত্তর কোরিয়ার উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম কং ইল গত রোববার এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, শিগগিরই সীমান্তের ওপারে দক্ষিণ কোরিয়ার ভেতরে ময়লা-আবর্জনা চালান করা হবে। এগুলো অপসারণের জন্য কতটুকু সামর্থ্যের প্রয়োজন তা বুঝতে পারবে দেশটি।