চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখার লকার থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার গায়েবের অভিযোগে মুখ খুলেছে কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিন সদস্যের একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও জানানো হয়েছে।
আজ রোববার (২ জুন) ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাংকটি এ তথ্য জানায়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার গ্রাহক রোকেয়া আক্তার বারী ও তার কন্যা নাসিয়া মারজুকা যৌথ নামে ২০০৬ সাল থেকে
ব্যাংকের একটি লকার ব্যবহার করে আসছেন। প্রতিটি লকার খোলার জন্য দুটি চাবির প্রয়োজন হয়। যার একটি গ্রাহক ও অপরটি ব্যাংকের নিকট থাকে। গ্রাহকের চাবি ব্যতীত শুধুমাত্র ব্যাংকে রক্ষিত চাবি দিয়ে কোনভাবেই লকার খোলা সম্ভব নয়। ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহককে তার লকারের মূল চাবি বুঝিয়ে দেয়া হয়। লকারে রক্ষিত মালামাল ও তার পরিমাণ সম্পর্কে একমাত্র গ্রাহক ব্যতীত ব্যাংকার বা অন্য কোন ব্যক্তির জানার সুযোগ নেই।
আরও বলা হয়, গত ৮ এপ্রিল ওই গ্রাহক লকার ব্যবহারের জন্য ব্যাংকে আসেন। ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রাহকের উপস্থিতিতে মাস্টার কী (চাবি) দিয়ে লকার আনলক করেন।
পরবর্তীতে গ্রাহক যথারীতি তার কাছে থাকা চাবি ব্যবহার করে পরিপূর্ণভাবে লকার খুলে তার কাজ শেষে লকার বন্ধ করে ব্যাংকারকে অবহিত করে চলে যান। যেহেতু লকার হোল্ডারের চাবি দিয়ে বন্ধ করা হয় সেহেতু লকার বন্ধ করার সময় নিয়ম মোতাবেক ব্যাংকের কারও উপস্থিত থাকার সুযোগ নেই। একমাত্র তিনিই তার লকার বন্ধ করতে পারেন।
লকার হোল্ডার লকার বন্ধ না করা পর্যন্ত তার চাবি বের করে আনা যায় না। গ্রাহক নির্দিষ্ট লকারে কী নিয়ে গেছেন বা রেখে গেছেন
তা ব্যাংকের জানার সুযোগ নেই। গ্রাহক যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তা লকার রুমের মূল ফটক নিয়মমাফিক তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন। গত ২৯ মে তারিখে ওই লকার হোল্ডার তার লকার ব্যবহার করতে এসে তার গহনা খোয়া গেছে বলে জানান। অথচ এর আগে তিনি নিজে লকার বন্ধ করে চাবি নিয়ে গেছেন। তারপর লকার হোল্ডার একবার বলেন তার ৩০০ ভরি স্বর্ণ নাই, কিছুক্ষণ পর আবার জানান ১৫০ ভরি স্বর্ণ নাই এবং কিছুক্ষণ পর আবার জানান ১৫০ ভরির মধ্যে অর্ধেক পেয়েছেন, বাকী অর্ধেক পান নাই। তিনি এ ধরনের স্ববিরোধী বিভ্রান্তকর তথ্য প্রদান করেন।
ইসলামী ব্যাংক আরও বলেছে, চট্টগ্রামের চকবাজার থানার পুলিশ ফোর্স সরেজমিন লকার রুম পরিদর্শন করেছেন। ইতোমধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগও নেয়া হয়েছে।
