ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বিজেপির ঘাটি উত্তরপ্রদেশে যোগী-মোদি ম্যাজিক ফিকে

ভারতে একটি কথা প্রবাদের মতো প্রচলিত রয়েছে। বলা হয়, উত্তরপ্রদেশ যার দিল্লি তার। সবচেয়ে জনবহুল উত্তর প্রদেশে লোকসভার আসন সংখ্যা ৮০টি হওয়ার এটি সবসময় মনোযোগের কেন্দ্রে থাকে।
  • | ০৪ জুন, ২০২৪
বিজেপির ঘাটি উত্তরপ্রদেশে যোগী-মোদি ম্যাজিক ফিকে প্রিয়াঙ্কা ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে অখিলেশ যাদব

ভারতের লোসকভা নির্বাচনের ফলাফলে অন্যতম নির্ধারক হিসেবে কাজ করে থাকে উত্তরপ্রদেশ। দেশটির একটি কথা প্রবাদের মতো প্রচলিত রয়েছে। বলা হয়, উত্তরপ্রদেশ যার দিল্লি তার। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোট গণনার শুরু থেকেই বিজেপি এবং ‘ইনডিয়া’ জোটের টানটান লড়াই চোখ পড়েছে। ৮০ আসনের উত্তরপ্রদেশে ৪৩ আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ‘ইনডিয়া’ জোটের অন্যতম শরিক অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি (এসপি)। আর বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৩৬টি আসনে। এছাড়া কংগ্রেস ছয়টি ও রাষ্ট্রীয় লোকদল দু’টি আসনে এগিয়ে আছে।

ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনবহুল উত্তর প্রদেশে লোকসভার আসন সংখ্যা ৮০টি হওয়ার এটি সবসময় মনোযোগের কেন্দ্রে থাকে।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এই ৮০টি আসনের মধ্যে ৬২টিতে জয় পায়। বাকি আসনগুলোর মধ্যে বিএসপি পায় ১০টি আর সমাজবাদী পার্টি পাঁচটি। ওই নির্বাচনে বিএসপি ও সমাজবাদী পার্টি জোট বাঁধে। এবারের নির্বাচনে সরকারবিরোধী জোট ‘ইনডিয়া’র অধীনে সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেস একযোগে আর বিএসপি নিজেদের মতো করে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছে।

মঙ্গলবার সকাল থেকে সারা ভারতের নজর ভোটগণনার দিকে। এখন পর্যন্ত যা ট্রেন্ড, তাতে দেখা গেছে, নরেন্দ্র মোদির বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএকে দূরন্ত চ্যালেঞ্জ দিয়েছে ‘ইনডিয়া’ জোট। তবে সবচেয়ে বেশি চমক দেখা গেছে উত্তরপ্রদেশে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৮০ আসনের মধ্যে ৬২টি আসনই পায় এনডিএ। কিন্তু এবারের অঙ্ক একেবারে বিপরীতে। দেখা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে আছে ৪৩ আসনে। এনডিএ সেখানে এগিয়ে রয়েছে ৩৬টিতে। অন্যান্য ১।

যদিও এই ফলাফল প্রাথমিক। এখন পর্যন্ত যে চিত্র দেখা যাচ্ছে তাতে সত্যিই বড় চমক রয়েছে। শেষ পর্যন্ত এই ট্রেন্ড বজায় থাকলে তা যে বিজেপির জন্য বড় ধাক্কা হতে চলেছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। কিন্তু কেন? ভোটব্যাঙ্কে এমন পরিবর্তনের পেছনে ফ্যাক্টর কী?

মনে করা হচ্ছে, এর পেছনে যে কয়েকটি ফ্যাক্টর রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম জাতিগত আদমশুমারি ইস্যু। রাহুল গান্ধী বার বার দাবি করেছেন, তার জোট ক্ষমতায় এলে জাতিগত আদমশুমারি হবে। অন্যদিকে সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব জোর দিয়েছেন পিডিএর উপরে। অর্থাৎ ‘পিছড়া দলিত অল্পসংখ্যক’। এর আগে যাদব ও মুসলিমদেরই প্রার্থী করতেন অখিলেশ। কিন্তু এবার দলিতদেরও প্রার্থী করেছে তার দল।

অন্যদিকে বিজেপি বরাবরের মতোই কট্টর হিন্দুত্ববাদী ইস্যুতে জোর দিয়েছে। কিন্তু কট্টর হিন্দুত্ববাদীতে ‘গাজন নষ্ট’ হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি একের পর এক কেলেঙ্কারি ফাঁস, বেকারত্বের মতো বিষয়গুলো উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ম্যাজিককে ফিকে করেছে। শেষপর্যন্ত হিসেব কী দাঁড়াবে তা সময় বলবে। কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল যে চমকপ্রদ হতে যাচ্ছে তা বলাই যায়।

উত্তরপ্রদেশের হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রাহুল গান্ধী রায়বরেলি ও অখিলেশ যাদব কনৌজ কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে মোদি বারাণসী কেন্দ্রে প্রাথমিকভাবে পিছিয়ে পড়েন কংগ্রেসের আজয় রাইয়ের কাছে। তবে শেষ পর্যন্ত ভোটে এগিয়ে গেছেন মোদি। জিতছেন রাজনাথ সিংও। অন্যদিকে আমেথিতে বিজেপির তারকা প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম স্মৃতি ইরানি তার প্রতিদ্বন্দ্বী ও কংগ্রেস প্রার্থী কিশোরী লালের চেয়ে পিছিয়ে আছেন।