ঢাকা | বঙ্গাব্দ

কনে দেখে ফেরার পথে প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানিতে পাত্রি দেখে বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন মালয়েশিয়ান প্রবাসী মিথুন মাতুব্বর ও তার ছোট ভাই অন্তর মাতুব্বর।
  • | ০৪ জুন, ২০২৪
কনে দেখে ফেরার পথে প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের নিহত মিথুন মাতুব্বর (৩২) ও অন্তর মাতুব্বর (১৮)

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানিতে পাত্রী দেখে বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন মালয়েশিয়ান প্রবাসী মিথুন মাতুব্বর ও তার ছোট ভাই অন্তর মাতুব্বর। তাদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ২ ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা।


সোমবার (৪ জুন) ভোর রাত ৪টার দিকে গোপালগঞ্জের শহর থেকে মোটরসাইকেলে মিথুন ও তার ভাই অন্তর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে কাশিয়ানি উপজেলার হরিন্নাকান্দি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ঘটনাস্থলেই মিথুন মারা যান। গুরুতর আহত অন্তরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনিও মারা যান।


নিহতরা হলেন মিথুন মাতুব্বর (৩২) ও অন্তর মাতুব্বর (১৮) ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের নোয়াকান্দা গ্রামের নিজামউদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে।


জানা গেছে, গত শনিবার (২ জুন) মিথুন মাতুব্বর তার ছোট ভাই অন্তর মাতুব্বরকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে গোপালগঞ্জে যান পাত্রী দেখতে। সেখানে পাত্রী দেখে পছন্দও হয় তাদের। মঙ্গলবার পাত্রী পক্ষের মিথুন মাতুব্বরের বাড়িতে এসে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। 


২ ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা পারুলী বেগম ও বাবা নিজামউদ্দিন। তাদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ, কান্না থামছেই না। কখনও কখনও জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন তারা। স্বজন ও প্রতিবেশীদের চোখেও পানি।


গত সোমবার আছর বাদ আলগী ইউনিয়ন ন্যাশনাল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দুই ভাইয়ের জানাজা শেষে নোয়াডাঙ্গা কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।


নিহতদের বাবা নিজামউদ্দিন মাতুব্বর বলেন, ছেলে আমার অনেক কষ্ট করছে পরিবারের জন্য। দীর্ঘদিন বিদেশে ছিল। ছয় মাসের ছুটি নিয়ে দেশে আসে। বিয়ে করে আবার চলে যাওয়ার কথা ছিল। একেবারেই চলে গেলো। আমার বাপ আমারে খুব ভালোবাসতো। কতো সম্মান করতো। আমার সবশেষ হয়ে গেছে।


ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ হেল বাকী জানান, খবর পেয়ে ভোররাত ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। গিয়ে দেখতে পাই মোটরসাইকেল পড়ে রয়েছে, মিথুন মারা গেছে। আর তার ভাই অন্তর গুরুতর আহত। উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে অন্তর মারা যান।


তিনি আরও জানান, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে হতাহতের ঘটনা ঘটে। ভোররাতে চোখে ঘুম থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ মো. খায়রুল আনাম বলেন, খবর পেয়ে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। কাশিয়ানি থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।