ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাব অবশেষে সোমবার (১০ জুন) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাস হয়েছে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবের পক্ষে কোনো ইতিবাচক সাড়া এখনো পাওয়া যায়নি। বরং প্রস্তাব না মানার ইঙ্গিত এসেছে দেশটির পক্ষ থেকে।
এদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেয়া এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ১৪টি। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল কেবল রাশিয়া।
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দেশে-বিদেশে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে। এর আগে নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় অস্ত্রবিরতির একাধিক প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বাইডেন প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়ে। এবার নিজস্ব উদ্যোগে যুদ্ধবিরতির এমন প্রস্তাব এনে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন বাইডেন।
ফিলিস্তিনি হামাস গোষ্ঠী সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষিত গাজায় যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে। প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পরপরই এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে যা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তা গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, (ইসরায়েলি বাহিনীর) সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, বন্দিদের বিনিময় (এবং) গাজার পুনর্গঠনকে তারা স্বাগত জানায়।এই প্রস্তাবের নীতিগুলো আমাদের জনগণ এবং প্রতিরোধ বাহিনীর দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
হামাস আরো বলেছে, আমাদের জনগণের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এসব বিষয় বাস্তবায়নের জন্য মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি সহযোগিতা করতেও আমরা ইচ্ছুক।
মার্কিন এই প্রস্তাবে একটি ‘পূর্ণ ও সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি’, হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তি, নিহত বন্দিদের দেহাবশেষ ফেরত এবং ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময়ের শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবে তিনটি পর্যায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রথম ধাপে বন্দি বিনিময়ের পাশাপাশি স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতি হবে। দ্বিতীয় ধাপে ‘শত্রুতার স্থায়ীভাবে অবসান’ এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে।
তৃতীয় ধাপে যুদ্ধের কারণে ব্যাপকভাবে ধ্বংস হওয়া গাজার জন্য বহু বছরের পুনর্গঠন পরিকল্পনা রয়েছে। অবশ্য নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।
তবে হামাস যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের যে দাবি করছে, ইসরায়েল তা পুরোপুরি নাকচ করে দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে শান্তি পরিকল্পনা কার্যকর করা কঠিন হবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। গাজায় হামাসকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার আগে ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ করতে প্রস্তুত নয়।
মূলত জাতিসংঘের অনুমোদনের পর বাইডেন প্রশাসন গাজায় শান্তি পরিকল্পনা কার্যকর করতে পারে কিনা, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। হামাস প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির দাবি করছে।
সূত্র: আনাদোলু