লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রে এবার ধরাশায়ী হয়েছে গেরুয়া শিবির। মুখ পুড়েছে শিন্ডে ও অজিত গোষ্ঠীর। এহেন পরিস্থিতিতে এবার গেরুয়া শিবিরের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। মারাঠাভূমে বিরোধী জোটের জয়ের জন্য মুচকি হেসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানালেন পওয়ার। জানালেন, ‘যেখানে যেখানে নরেন্দ্র মোদি রোড শো ও র্যালি করেছেন সেখানেই আমাদের জয় হয়েছে।’
লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে এবার মহারাষ্ট্রে অত্যন্ত বেহাল অবস্থা গেরুয়া শিবিরের। ৪৮ আসনের মারাঠাভূমে কংগ্রেস, শিব সেনা (উদ্ধব), এনসিপি (শরদ পাওয়ার) গোষ্ঠী এবার ৩০ টি আসন পেয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপি, শিব সেনা (শিণ্ডে), এনসিপি (অজিত পাওয়ার) গোষ্ঠী পেয়েছে মাত্র ১৭ টি আসন। একটি পেয়েছে নির্দল। এর মধ্যে এনসিপি (শরদ পাওয়ার) গোষ্ঠী ৮ টি আসনে জয় পেয়েছে।
নির্বাচনে মহারাষ্ট্র অন্যতম পাখির চোখ ছিল নরেন্দ্র মোদিদের। ভোট প্রচারে মারাঠা রাজ্য কার্যত চষে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই বিজেপির খারাপ ফলের পর প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষের সুরে ধন্যবাদ জানালেন শরদ পাওয়ার। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভোট প্রচারই আমাদের জয় নিশ্চিত করেছে। যেখানে যেখানে নরেন্দ্র মোদি রোড শো ও র্যালি করেছেন সেখানেই আমাদের জয় হয়েছে। এভাবে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক হাওয়া বিরোধী জোটের দিকে ঘোরানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আমার তরফ থেকে ধন্যবাদ।’
পাশাপাশি শিব সেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে বলেন, “মহা বিকাশ আঘাড়ির এই জয়ই শেষ নয়, এটা শুরু মাত্র। বিজেপি ৪০০ পারের স্লোগান তোলে। কিন্তু আচ্ছে দিনের সেই ন্যারেটিভের কী হল? মোদি যে গ্যারান্টি দিয়েছিলেন তার কী হল? দেবেন্দ্র ফড়নবিশ বলেন আমাদের সরকার রিক্সার ৩ চাকার মতো। এখন কেন্দ্রের সরকারেরও সেই একই হাল।”
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে বিজেপি জোটের বেহাল অবস্থার পিছনে পূর্বে তাদের দল ভাঙানোর খেলাকেই দায়ী করেছে বিশেষজ্ঞ মহল। প্রথমে উদ্ধবের নেতৃত্বাধীন শিব সেনা ভেঙে শিণ্ডেকে বিজেপির দিকে এনে আলাদা শিবসেনা গঠন ও সরকার ভাঙা। অন্যদিকে, শরদ পাওয়ারের এনসিপি ভেঙে অজিত পাওয়ারকে নিজেদের দিকে টেনে আনা।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, সরকার ভাঙতে বিজেপির এহেন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রকে ভালোভাবে নেয়নি মহারাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ। তারই ফল দেখা গেছে ভোট বাক্সে। মহারাষ্ট্রে এবার মাত্র ৯ টি আসন পেয়েছে বিজেপি, শিব সেনা (শিণ্ডে) ৭টি ও এনসিপি (অজিত পাওয়ার) পেয়েছে ১ টি আসন। অন্যদিকে, কংগ্রেস পেয়েছে ১৩টি, শিব সেনা (উদ্ধব) ৯টি, এনসিপি (শরদ পাওয়ার) গোষ্ঠী ৮টি আসন।