সুপার এইটে খেলতে হলে এই ম্যাচ জিততেই হতো। এমন ম্যাচে ব্যাটাররা শুরুতেই ব্যর্থ হলেন। তবে আশার আলো হয়ে এলেন মোস্তাফিজুর রহমান-তানজীম হাসান সাকিবরা। দুর্দান্ত বোলিং করে দলকে এনে দিলেন জয়। সেই সঙ্গে নিশ্চিত করলেন সুপার এইট।
আজ সোমবার (১৭ জুন) সেন্ট ভিনসেন্টের অ্যার্নস ভ্যালেতে আগে ব্যাটিং করে ১৯.৩ ওভারে বাংলাদেশ মাত্র ১০৬ রানেই গুটিয়ে যায়। জবাবে নেপাল সবকটি উইকেট হারিয়ে ৮৫ রানের বেশি করতে পারেনি। ২১ রানের জয়ে ডি গ্রুপ থেকে রানার্সআপ হয়ে বাংলাদেশ চলে গেছে সুপার এইটে। যেখানে বাংলাদেশের অপেক্ষায় অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও আফগানিস্তান।
এই ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক তানজিম। ৪ ওভারে ২ মেডেনে ৭ রানে তার শিকার ৪ উইকেট। তার বোলিংয়ে ২১ বলই ছিল ডট। নেপালের ব্যাটসম্যানদের জন্য দুর্বোধ্য হয়ে ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভারে ১ মেডেনে ৭ রানে তার শিকার ৩ উইকেট। মোস্তাফিজও ডট দিয়েছেন ২০টি। এছাড়া তাসকিন ১ এবং সাকিব পেয়েছেন ২ উইকেট। তিন ম্যাচ পর সাকিবের পকেটে গেছে উইকেট।
লক্ষ্য তাড়ায় নেপালের শুরুটাও ছিল বিবর্ণ। ২৬ রানে নেপালের ৫ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। যার পুরোপুরি কৃতিত্ব পেসার তানজিমের। টানা ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ৭ রানে ৪ উইকেট তুলে নেন ডানহাতি পেসার। যেখানে তার দুই ওভারই ছিল মেডেন। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান নিজের প্রথম ওভারে পেয়ে যান আসিফ শেখের উইকেট।
শুরুর বিপর্যয় পেরিয়ে নেপাল লড়াই করে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে। কুশল মালা ও দীপন্দ্র ৫৮ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েন। শুরুতে থিতু হতে সময় নিয়েছিলেন দুই ব্যাটসম্যান। এরপর প্রতি আক্রমণে গিয়ে রান তোলেন। তবে বেশিদূর যেতে দেননি মোস্তাফিজ। ২৭ রানে বিদায় করেন মালাকে।
আরেক ব্যাটসম্যান দীপন্দ্র নেপালের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। তাসকিনকে পয়েন্টের ওপর দিয়ে ছক্কা উড়ান চোখের পলকে। মনে হচ্ছিল জয়ের সমীকরণ মিলিয়ে ফেলবেন তিনি। কিন্তু ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজ ম্যাজিকে পাল্টে যায় হিসাব।
১২ বলে নেপালের ২২ রান দরকার ছিল। ধ্রুপদী কাটার, স্লোয়ার ও স্টক বলে মোস্তাফিজ প্রথম পাঁচ বলে কোনো রানই দেননি। শেষ বলে তুলে নেন দীপন্দ্রর উইকেট। তাতে ম্যাচের ভাগ্য লিখে ফেলে বাংলাদেশ।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলে তানজিদ ফিরতি ক্যাচ দেন পেসার সোম্পাল কামিকে। চরম অফফর্মে থাকা শান্ত (৪) আরো একবার ব্যর্থ। লিটনও ফেরেন দ্রুত। তাওহীদ ক্রিজে এসে তাড়াহুড়ো করে থেমে যান ৯ রানে। স্কোরবোর্ডে ৩১ রান তুললেও হারায় ৪ উইকেট। যেখানে ডট বলই ছিল ২২টি।
রান আউটে শেষ মাহমুদউল্লাহর ১৩ রানের ইনিংস। সাকিবও (২২) বেশিক্ষণ টিকলেন না। স্কোরবোর্ডে ১০ রান যোগ হতে রোহিত পাউডলের বলে এলবিডব্লিউ। আউট হয়েছেন জেনেও রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে ভাগ্য ফেরেনি।
শেষের দিকে রিশাদের একটি করে চার ও ছক্কায় ১৩, তাসকিনের ১২ স্কোরবোর্ডকে সমৃদ্ধ করে। উইকেট রক্ষক জাকের আলীর ২৬ বলে ১২ রানের ইনিংসটি দৃষ্টিকটু হলেও শতরান পেরিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।
বোলিংয়ে নেপালের আক্রমণ ছিল সম্মিলিত। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন সোম্পাল, রোহিত, দীপন্দ্র ও লামিচানে। লেগ স্পিনার লামিচানে ২ উইকেট নিয়ে পৌঁছে যান সেঞ্চুরি উইকেটের মাইলফলকে।