নানা অজুহাতে ঢাকার বাজারে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েই চলেছে। ছোট জাতের দেশীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজিতে। অন্যদিকে হাইব্রিড মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়।
অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁকরোল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, গোল বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, লতি প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল প্রতি কেজি ৬০ টাকা, করোলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৭০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ৬০ টাকা এবং ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে সোহান আহমেদ নামক এক ক্রেতা বলেন, আমি রীতিমতো বিস্মিত হয়ে গেছি কাঁচামরিচের দাম শুনে। ঈদের পর আজই বাজারে এসেছি প্রথম, কাঁচামরিচের দাম যে এতটা বেড়ে গেছে এ নিয়ে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। হঠাৎ করেই ইচ্ছে মতো দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। আমরা ক্রেতারা যেন সবসময়ই বিক্রেতাদের কাছে, অসাধু ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে আছি। তারা যখন যা ইচ্ছা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। দেশের কাঁচামরিচ আমরা কেন এত দাম দিয়ে কিনব? এটা রীতিমতো বিস্ময়কর একটি ব্যাপার। দুই একদিনের ব্যবধানে কাঁচামরিচের কেজি গিয়ে ঠেকবে ৪০০ টাকায়, এটা মেনে নেওয়া যায় না। হঠাৎ করেই এত দাম বেশি, তবুও বাধ্য হয়ে এক পোয়া কাঁচা মরিচ ১০০ টাকায় কিনতে হলো।
কাঁচা মরিচের বাড়তি দামের কারণ ব্যাখ্যা করে গুলশান সংলগ্ন লেকপার বাজারের সবজি বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে কারওয়ানবাজারে প্রতিপাল্লা (৫ কেজি) কাঁচা মরিচের পাইকারি দাম পড়েছে ৮০০ টাকা। এখন সেই মরিচের দাম পড়ছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। আর দেশি মরিচ প্রতিপাল্লার দাম পড়ছে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকা। যে কারণে খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচ ৩২০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাজারে এখন কাঁচা মরিচের সরবরাহ একেবারেই কম। এর মূল কারণ কাঁচা মরিচের মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। বাজারে এখন যেসব কাঁচামরিচ আসছে সেসব ক্ষেতের একেবারে শেষ সময়ের মরিচ। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কমে গেছে বাজারে। সব মিলিয়ে বাজারে কাঁচামরিচের দাম বাড়তি যাচ্ছে। ঈদের সময় থেকে কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে। নতুন করে কাঁচা মরিচ ওঠার আগ পর্যন্ত এ দাম বাড়তিই থাকবে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, একে ঈদের সময় থেকে এখন পর্যন্ত রাস্তায় যানজট , ট্রাকে করে পরিবহন করার ভাড়া অনেক বেশি, সে কারণে ঢাকায় কাঁচা মরিচ তুলনামূলক কম আসছে। এ ছাড়া মৌসুমের শেষ, ক্ষেতে একেবারে শেষ সময় চলছে মরিচের। অনেক ক্ষেতের মরিচ শেষ হয়ে গেছে, নতুন করে লাগানো গাছে এখনো মরিচ আসতে শুরু করেনি। এসব কারণে পাইকারি বাজারেই কাঁচামরিচের সরবরাহ অনেক কমে গেছে। পাশাপাশি যে সময় নতুন করে মরিচ লাগানোর সময় ছিল, সে সময়ে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে কৃষক সঠিক সময়ে কাঁচা মরিচ লাগাতে পারেনি। সে সময় যদি কাঁচা মরিচের গাছ লাগানো যেত তাহলে হয়তো ক্ষেতের নতুন মরিচ এতদিন বাজারে চলে আসতো। এখন বাজারে নতুন মরিচ আসতে আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। যতদিন পর্যন্ত নতুন মরিচ না আসছে, ততদিন পর্যন্ত সরবরাহ কম থাকায় কাঁচামরিচের দাম এমন বাড়তিই থাকবে।