মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বাইডেন ও ট্রাম্পের প্রথম টেলিভিশন বিতর্ক শেষ হয়েছে। ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে’ অংশ নিয়ে সিএনএনের আটলান্টা স্টুডিওতে মুখোমুখি হন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন।
বিতর্কে অংশ নিয়ে বর্তমান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে একে অপরকে দুষেছেন। তাদের আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে অভিবাসন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ, ইউক্রেন যুদ্ধ ও দুই নেতার বয়স। এছাড়া বিতর্কের এক পর্যায়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে একে অপরকে দায়ী করেছেন দুই প্রার্থী।
মঞ্চে পাশাপাশি বসেও তারা একে অপরের সঙ্গে করমর্দন করেননি। ট্রাম্প রীতিমতো আক্রমণ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। মার্কিন অর্থনীতির মতো নানা বিষয়ে করা তার অভিযোগের পালটা দিয়েছেন বাইডেনও। বাইডেন বিশ্বকে নতুন যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমি যদি প্রেসিডেন্ট থাকতাম তাহলে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করতো না। এর জবাবে বাইডেন বলেন, ট্রাম্প তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চায়।
এক্সিট পোল ট্রাম্পকে সামান্য এগিয়ে রাখলেও খুব বেশি পিছিয়ে নেই বাইডেনও। এই পরিস্থিতিতে মুখোমুখি বিতর্কে দুজনই সুর চড়ালেন। চার বছর পর দুই নেতার মুখোমুখি বাকযুদ্ধের দিকে কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, নজর ছিল বহু দেশেরই। যদিও শেষপর্যন্ত দেখা গেল এদিনের বিতর্কে ট্রাম্পই যেন পিছনে ফেললেন বাইডেনকে।
এদিন ট্রাম্প বাইডেনকে গর্ভপাতের অধিকার, মুদ্রাস্ফীতি, সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মতো নানা বিষয়ে আক্রমণ করেন। বাইডেনের তূণে ছিল ক্যাপিটল হিংসা, কোভিড নীতির মতো বিষয়। এমনকী ট্রাম্পের ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়াও ছিল বাইডেনের অন্যতম অস্ত্র। তবে দুজনই ইজরায়েলের প্রতি সমর্থন এবং চীনের প্রতি কড়া মনোভাব ব্যাক্ত করেছেন। পাশাপাশি পুতিন প্রসঙ্গে ট্রাম্পকে প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে দেখা গেছে। কিন্তু পরে তিনি বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের ক্ষেত্রে পুতিনের শর্তে তার সায় নেই। বাইডেন অবশ্য রীতিমতো কড়া সুরে জানিয়ে দিয়েছেন, পুতিন একজন যুদ্ধাপরাধী।
দশকের পর দশক ধরে মার্কিন ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট’ গভীর রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সেই তুলনায় বাইডেন-ট্রাম্পের এদিনের কথোপকথন ছিল অনেকটাই নিষ্প্রভ। সেজন্য অবশ্য অনেকটাই দায়ী অনুষ্ঠানের ফরম্যাট। একজন যখন কথা বলছেন, তখন অন্যজনের মাইক্রোফোন ছিল ‘মিউট’ করা। তাই সব মিলিয়ে বিতর্কটি অনেকটাই সাংবাদিক বৈঠকের মতো হয়ে ওঠে, যেখানে বক্তারা পালা করে নিজেদের বক্তব্য রাখছিলেন। ফলে সেই অর্থে প্রত্যাশা পূরণ হল না দর্শকদের।
আগামী ৫ নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বিশ্বজুড়ে নানা সংকটের মধ্যেই এবার নির্বাচন হতে যাচ্ছে দেশটিতে। এরই মধ্যে মার্কিন রাজনীতি নিয়ে মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়েছে। অনেক মার্কিন ভোটারেরই আশঙ্কা নির্বাচনের পরে সংঘাত ছড়িয়ে পড়াতে পারে।