পূর্ব আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট চলতি মৌসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড় বেরিল আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে ক্যারিবীয় অঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে। সোমবার (১ জুলাই) ঘূর্ণিঝড়টি দ্বীপটিতে ভয়াবহ তাণ্ডব চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছে ইউএস ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)।
এনএইচসি জানিয়েছে, বার্বাডোস থেকে প্রায় ৬৭৫ কিলোমিটার (৪২০ মাইল) পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থান করছে বেরিল। সোমবার সকালে এটি উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানতে পারে। সেই সময় ভয়াবহ বিপজ্জনক ঝড়ে পরিণত হতে পারে বেরিল।
ধারণা করা হচ্ছে, ঝড়টি ক্যাটাগরি-৩ বা এরও বড় হারিকেনে রূপ নেবে। ঘণ্টায় এর বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১১১ মাইল (১৭৯ কিলোমিটার)। এনএইচসি আরও বলেছে, বার্বাডোস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইনস এবং গ্রেনাডা, মার্টিনিক, টোবাগো এবং ডোমিনিকাতে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
হারিকেন বিশেষজ্ঞ মাইকেল লোরির মতে, ১৯৫৭ সালের অড্রে এবং ১৯৬৬ সালের আলমার পরে আটলান্টিকে চলতি জুনে রেকর্ড বেরিল তৃতীয় ক্যাটাগরির ঘূর্ণিঝড়। তার মতে— ‘বেরিল এই অঞ্চলে বছরের এই সময়ের জন্য একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং বিরল হারিকেন। আঘাত হানার আগেই এটি ঐতিহাসিক হয়ে উঠেছে।’
এক এক্স পোস্টে লোরি লিখেছেন, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের আগে আটলান্টিকে মাত্র পাঁচটি বড় (তৃতীয় ক্যাটাগরি) হারিকেন রেকর্ড করা হয়েছে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আটলান্টিকে এ পর্যন্ত আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে বেরিল হবে ষষ্ঠ ও প্রথম সারির ঘূর্ণিঝড়।
আটলান্টিকে জুন মাসের প্রথম দিকে বড় ধরনের হারিকেন সৃষ্টির এই ঘটনা অনেকটা বিরল বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন। সোমবারের মধ্যে বেরিল ক্যাটাগরি-৪ হারিকেনে রূপ নিতে পারে বলে পূর্বাভাস দেন তারা। আবহাওয়াবিদদের মতে— আটলান্টিক মহাসাগর লাগোয়া অঞ্চলে ১ জুন থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলে হারিকেনের মৌসুম। চলতি বছরে ওই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি হারিকেন আঘাত হানতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা।
চলতি বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে অন্তত ২৫টি ঝড় আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ)। সংস্থাটি বলছে— ২৫টি ঝড়ের মধ্যে অন্তত ১৩টি হারিকেনে পরিণত হতে পারে।
মে মাসের শেষের দিকে সংস্থাটি জানিয়েছিল, চলতি বছরটি একটি ‘ব্যতিক্রমী’ হারিকেনের মৌসুম হতে পারে। এ সময় ৩ বা তার বেশি ক্যাটাগরি পর্যন্ত সাতটি ঝড় হতে পারে। একই সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরের লা নিনা প্রভাবের কথাও উল্লেখ করে সংস্থাটি।
সূত্র: আল-জাজিরা ও সিএনএন