বৃষ্টিপাত না হওয়ায় রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) মধ্যরাত থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় উপজেলা সদরের ডুবে যাওয়া নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নামতে শুরু করে। তবে, বেশকিছু এলাকায় এখনো পানিবন্দি রয়েছেন বাসিন্দারা।
বুধবার (৩ জুলাই) সকাল থেকে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গ্রামের পানি কমতে শুরু করে। এতে স্বস্তি ফিরে আসে উপজেলার বাসিন্দাদের মাঝে। তবে বাঘাইছড়ি কাচালং সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস এখনো পানিতে ডুবে আছে। ফলে এই কলেজের বিভিন্ন বিভাগের ৪৬৮ জন শিক্ষার্থীর আগামীকালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
কলেজের প্রধান সড়কটি ৫ ফুট গভীর পানির নিচে ডুবে রয়েছে। এছাড়া কলেজের নিচ তলার সবকটি পরীক্ষা কেন্দ্র পানিতে তলিয়ে গেছে। শুধু এইচএসসি পরীক্ষা নয়, কলেজে আজ বুধবার থেকে শুরু হয়েছে স্নাতক ২য় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা, বন্যার পানি মাড়িয়ে কলেজে যেতে দেখা গেছে পরীক্ষার্থীদের।
পরীক্ষার্থী জিয়াউল হক বলেন, আমি লুঙ্গী পড়ে পানি মাড়িয়ে কলেজ গেইটে এসেছি। ব্যাগে করে প্যান্ট, শার্ট, এডমিট কার্ডসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু নিয়ে এসেছি। এখন বুক সমান পানি পেরেয়ি কলেজে যাবো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য।
কাচালং সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা খুবই চিন্তিত। বন্যার কারণে ৪৬৮ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা কিভাবে নিবো বুঝতে পারছি না। ইতোমধ্যে বন্যার বিষয়টি বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে, কিন্তু পরীক্ষা বন্ধের বিষয়ে কোন নির্দেশনা আসেনি। এমতাবস্থায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উৎকন্ঠায় রয়েছে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, বাঘাইছড়িতে বন্যায় আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় বাঘাইছড়িতে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। উপজেলার ৩২টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় চার হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন, যার মধ্যে আড়াই হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের জন্য খাবার এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।