ভারতের আসাম রাজ্যে বন্যা পরিস্তিতির আরো অবনতি হয়েছে। টানা বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে দু’জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর ফলে আসামে বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৫২ জনে দাঁড়াল। বানের পানিতে ভাসছে কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান, দলে দলে পালাচ্ছে পশুরা, বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্রের পানি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
বন্যায় ২৪ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের পরিস্থিতিও শোচনীয়। উদ্যানের অন্তত ৭০ শতাংশ জমি পানির নিচে। আতঙ্কে উদ্যান ছেড়ে পালাচ্ছে পশুরা। সরকারি হিসাব বলছে, কাজিরাঙায় চলতি মরসুমে গন্ডার, হরিণসহ ৭৭টি পশুর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে অন্তত ৬২টি হরিণ রয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, আসামের ৩৫টি জেলার মধ্যে ৩০টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হয়েছে। এক মাস ধরে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রসহ একাধিক বড় নদীর পানি বইছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। এর ফলে বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নষ্ট হয়েছে অনেক ফসল।
আসামের বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে অন্যতম- ধুবড়ি, ডারাং, কছাড়, বরপেটা এবং মরিগাঁও। এখনও পর্যন্ত ৪৭ হাজার মানুষকে স্থানান্তরিত করে আশ্রয় শিবিরে পাঠানো হয়েছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। তবে এখনও হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া।
রাজ্যের শহরাঞ্চলগুলিও গত ৯ দিন ধরে পানির নিচে। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ডিব্রুগড়ে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলিতে পরিস্থিতির তত্ত্বাবধানের জন্য মন্ত্রীদের নিয়োগ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। মানুষের সমস্যার কথা শুনে সবাই মিলে তার সমাধানের চেষ্টা করছি।
কাজিরাঙা উদ্যানে ১৫ হাজারের বেশি পশু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৯৪টি পশুকে। তার মধ্যে ৫০টিকে নিরাপদে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ১১টি পশু চিকিৎসা চলাকালীন মারা গিয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আসামের রাস্তাঘাট, সেতু এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপণা। নিয়ামতিঘাট, গুয়াহাটি, গোয়ালপাড়া, ধুবড়িতে ব্রহ্মপুত্র এবং এর উপনদীগুলি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। বরাক নদীর পানিও ফুঁসছে। বৃষ্টি না থামলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় প্রশাসনের।