প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন একজন মুসলিম নারী। তার নাম ব্যারিস্টার শাবানা মাহমুদ। যুক্তরাজ্যে তিনি ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত।
শাবানা মাহমুদ যে শুধু যুক্তরাজ্যের প্রথম মুসলিম নারী বিচারমন্ত্রী তাই নয়, তিনি দেশটির ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী যিনি ‘লর্ড অব চ্যান্সেলর’ নামক প্রাচীন পদ গ্রহণ করেছেন। আগামী ১৭ জুলাই পার্লামেন্ট শুরুর আগে রয়্যাল কোর্ট অব জাস্টিসে লর্ড চ্যান্সেলর হিসেবে শপথ নেবেন।
শাবানার জন্ম ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে। তবে তিনি পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণাধীন আজাদ-কাশ্মীর বংশোদ্ভূত। তার বাবা-মা আজাদ কাশ্মীরের মিরপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তবে শাবানা মাহমুদের শৈশব কেটেছে সৌদি আরবের তায়েফে। তিনি ইংরেজির পাশাপাশি উর্দু ও মিরপুরি ভাষায় কথা বলতে পারেন। খবর আরব নিউজের।
পূর্ণ মন্ত্রী হওয়ার আগে শাবানা যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ছায়া মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দুই বছর ধরে উপনির্বাচনের সময় লেবার পার্টির নির্বাচনি প্রচারণার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৬ সাল থেকে শাবানা লেবার পার্টির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ৪ জুলাইয়ের নির্বাচনের জন্য দলের ইশতেহার তৈরিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।
অক্সফোর্ড গ্র্যাজুয়েট এই নারী রাজনীতিক ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো লেবার পার্টির টিকিটে নির্বাচিত হন এবং তখন থেকেই জয়ী হয়ে আসছে। এবারের নির্বাচনে তিনি ১৫ হাজার ৫৫৮ ভোট পেয়ে নিজ আসনে জয়ী হয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ের পর দায়িত্ব নেয়া নতুন প্রধানমন্ত্রী লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টার্মার ২০ মন্ত্রী বেছে নিয়ে তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়েছেন। এ মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ অর্থমন্ত্রী (চ্যান্সেলর অব একচেকার) পদসহ রেকর্ড ১১টি পদে নারীদের বেছে নিয়েছেন স্টার্মার।
নতুন সরকারে উপপ্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ পেয়েছেন অ্যাঞ্জেলা রায়নার। অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন র্যাচেল রিভস। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাস গড়েছেন তিনি। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে তিনিই প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী।
নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন ইয়েভেট কুপার, ব্রিজেত ফিলিপসন শিক্ষামন্ত্রী, শাবানা মাহমুদ বিচারমন্ত্রী, লিজ কেন্ডাল শ্রম ও কারামন্ত্রী, লুইস হেইগ পরিবহনমন্ত্রী, লিসা নন্দী সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী, লুসি পাওয়েল হাউস অব কমনস নেতা ও অ্যাঞ্জেলা স্মিথ হাউস অব লর্ডসের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। এছাড়া জো স্টিভেনস ওয়েলস বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৪১২ আসনে জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১২১ আসন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য কোনো দলের প্রয়োজন হয় ৩২৬ আসন।
ঢাকা
| বঙ্গাব্দ
